প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ অ্যাম্বুলেন্স চলছে না চালকের অভাবে

ফানাম নিউজ
  ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:২৮

নদী পরিবেষ্টিত উপজেলা খুলনার দাকোপ। সড়কের অবস্থাও ভালো নয়। রোগী পরিবহনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স দাবি করে আসছিলেন দাকোপবাসী। প্রধানমন্ত্রী তাদের দাবি পূরণ করে উপহার দেন নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি কোনো কাজেই আসছে না উপজেলাবাসীর।

জানা গেছে, সচল রাখতে মাঝে মধ্যে এটি নিয়ে নৌবিহার করেন উপজেলার স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বছরে এক দুবার রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রটোকলেও ব্যবহার করা হয় এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স। এক বছরে মাত্র ১৫ জনের মতো রোগী বহন করেছে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি। বাকি সময় পড়ে থেকেছে পাশের চুনকুড়ির তীরে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, চারদিকে নদীবেষ্টিত দাকোপের সড়ক ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে রোগী পরিবহনে সমস্যা হয়। কিছু কিছু ইউনিয়ন থেকে সদর উপজেলায় আসার প্রধান মাধ্যম নদীপথ। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে নৌ অ্যাম্বুলেন্স দাবি করে আসছিলেন দাকোপবাসী। ২০২০ সালের নভেম্বরে ওই দাবি পূরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া হয় একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি।

দাকোপ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, ‘দাকোপে একটা নৌ অ্যাম্বুলেন্স আছে। তবে যারা চুনকুড়ি নদীর পাড়ে যায় শুধু তারাই জানে। এটা নিয়ে কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই।’

সুতারখালী গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, দাকোপ একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। এর চারিদিকে নদী। যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষাকালে ওয়াপদার বাঁধগুলোতে হাটুসমান কাদা থাকে। তখন এক কিলোমিটার যেতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। তাই এলাকাবাসীর দাবি ছিল একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু তার সুফল ভোগ করতে পারছে না এলাকাবাসী। তিনি অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, তা কেউ জানেন না।

দাকোপ সদর থেকে সবচেয়ে দূরের ইউনিয়ন সুতারখালী। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির বলেন, ‘এখানে যে একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, তা আমি নিজেই জানি না। কোনো প্রচারও নেই। প্রচারণা না থাকলে সাধারণ মানুষ সেটি জানবে কী করে?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক নিজামী বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি যখন দেওয়া হয় তখন উপজেলায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সের চালকের কোনো পদ ছিল না। তাই কোনো লোক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া একরামুলকে দিয়ে কিছুদিন চালানো হয়েছে। কিন্তু মেয়াদ শেষে তারও চাকরি চলে যায়। তাও প্রায় এক বছর আগে। এরপর আর লোক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

তবে তিনি বলেন, এটা চালাতে লোক নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। লোক নিয়োগ হলেই অ্যাম্বুলেন্সটি আবারও রোগী পরিবহন করতে পারবে।

সূত্র: জাগো নিউজ