র‌্যাব তৈরি করেছে আমেরিকানরা আর ব্রিটিশরা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ফানাম নিউজ
  ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০১:৩৭

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, র‌্যাব তৈরি করেছে আমেরিকানরা আর ব্রিটিশরা। তাদের (র‌্যাব) প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা শিখিয়েছে, কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, হাউ টু ইন্টারগেশন (কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে)। এখন যদি এসবে কোনো সমস্যা হয়ে থাকে কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহলে আবার নতুন করে ট্রেনিং (প্রশিক্ষণ) হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কিন্তু হঠাৎ করে কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর এই যে স্যাংশনগুলো (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হয়েছে, সেটা কিন্তু খুব জাস্টিফাইড (ন্যায়সংগত) নয়। চাকরি করেছেন বলেই তাঁকে শাস্তি দিতে হবে, ইট ইজ নট ভেরি ফেয়ার (এটা খুব ন্যায্য নয়)।

শুক্রবার সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার দুপুরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে দিরাই উপজেলার নদগীপুর গ্রামে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ব্রিটিশশাসিত অঞ্চল জিব্রাল্টারের ব্যবসা, পর্যটন ও বন্দরমন্ত্রী ভিজয় দারিয়ানানি; সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ শামীমা শাহরিয়ার; যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য টম হান্ট ও পল ব্রিস্টো; যুক্তরাজ্যপ্রবাসী নদগীপুর গ্রামের বাসিন্দা জেড আই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জিল্লুর হোসাইন; সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্য অতিথিরা নদগীপুর গ্রামের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ কে আব্দুল মোমেন পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমাদের র‌্যাব কাজকর্মে অত্যন্ত দক্ষ। তারা খুব ইফেক্টিভ (কার্যকর), ভেরি এফিশিয়েন্ট (খুব দক্ষ) এবং তারা করাপ্ট (দুর্নীতিগ্রস্ত) নয়। এ জন্যই তারা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। আমাদের দেশের সন্ত্রাসী তাদের কারণেই কমে গেছে। হোলি আর্টিজানের পর গত কয়েক বছর দেশে আর কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা হয়নি। এটা সম্ভব হয়েছে র‌্যাবের কারণে। স্বয়ং ইউএস স্টেটস ডিপার্টমেন্ট সেটা স্বীকার করেছে।’

পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক, যাঁরা আইনশৃঙ্খলা পছন্দ করেন না, যাঁরা সন্ত্রাস পছন্দ করেন কিংবা অন্য ধরনের ড্রাগস (মাদক) পছন্দ করেন, তাঁরাই র‌্যাবকে পছন্দ করেন না। কারণ, র‌্যাব ড্রাগসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। মানব পাচারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। একতরফা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের বিরুদ্ধে অপ্রপচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের জানাব, হয়তো ঠিকমতো তাদের জানাতে পারিনি। কারণ, অনেকে একতরফা তথ্য পেয়েছে। যখনই একটা মৃত্যু হয়, তখন জুডিশিয়াল প্রসেসে (বিচারিক প্রক্রিয়ায়) সেটির তদন্ত হয়। দুটি ক্ষেত্রে র‌্যাব অন্যায় করেছিল। সেগুলোর জুডিশিয়াল প্রসেসে বিচার হয়েছে। ওদের শাস্তিও হয়।’

আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘ওরা বলেছে যে গত ১০ বছরে ৬০০ জন মিসিং (নিখোঁজ) হয়েছে। আমেরিকায় প্রতিবছর এক লাখ মিসিং হয়। তো এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? আর আমাদের দেশে মিসিং যারা হয়, পরে দেখা যায় আবার সে বের হয়ে আসছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য যাচাই–বাচাই না করে, বড় বড় বিদেশি লোক না জেনে অভিযোগ করেন। যাঁরা অভিযোগ করেছেন, আমি তাঁদের আহ্বান করি, বলি, আসেন, দেখেন, লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন, সত্য ঘটনা উদ্‌ঘাটন করেন। তারপর আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্য অতিথিরা বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হেলিকপ্টারে করে আবার ঢাকায় ফিরে যান।

সূত্র: প্রথম আলো