শিরোনাম
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজের পাঠদান শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
এরই মধ্যে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত এই শিক্ষার্থী উপজেলার ৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ওই ছাত্রী আক্রান্ত হওয়ার পর তৃতীয় শ্রেণির পাঠদান ১৪ দিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
মঙ্গলবার বিদ্যালয়টিতে গিয়ে ওই ছাত্রী আক্রান্ত হওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক আতঙ্কিত নয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোহেলী পারভীন পান্না। তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিন ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে এসেছিল। সেই দিন তার মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়নি। এর পর সে বাড়িতে বসে জ্বরে আক্রান্ত হয়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেওয়া হলে ১৭ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই ছাত্রীর মাও করোনায় আক্রান্ত। আমার ধারণা, সে পরিবার থেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের আরও তিন শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত। তারা বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক অর্পিতা মণ্ডল বলেন, প্রতিদিন আমরা শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করাই। করোনার বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে কোনো আতঙ্ক নেই। আমাদের বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার সন্তোষজনক।
বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ইতি মধু ও মেঘা দাস বলেন, অনেক দিন পর বিদ্যালয় খুলেছে। আমরা বিদ্যালয়ে আসতে পেরে আনন্দিত। প্রতিদিন আমরা মাস্ক পরে বিদ্যালয়ে আসি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকরা আমাদের পাঠদান করান। করোনা নিয়ে আমাদের কোনো আতঙ্ক নেই।
অভিভাবক আসমা বেগম ও সাইদুর সিকদার বলেন, আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে কোনো প্রকার কুণ্ঠাবোধ করছি না। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা চাই না বিদ্যালয় আর বন্ধ থাকুক।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার ঢালী বলেন, তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আমরা ওই বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণির পাঠদান ১৪ দিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি। সার্বক্ষণিকভাবে আমরা ওই ছাত্রীর খোঁজখবর নিচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত বৈদ্য বলেন, আক্রান্ত ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। আমরা তাকে করোনার চিকিৎসা দিয়েছি। বর্তমানে সে হোম আইসোলেশনে আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, উপজেলা প্রতিটি বিদ্যালয়েই স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন পাঠদান চলছে। আমরা এসব বিদ্যালয় প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। প্রতিটি বিদ্যালয়েই প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। কোনো শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তার নমুনা পরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট পজিটিভ এলে আমরা ওই শ্রেণি বা বিদ্যালয় বন্ধ করে দেব।