শিরোনাম
অনলাইন নিবন্ধন, অবতরণ ফি ছাড়াই ৫১৭ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে গেলো ‘বার আউলিয়া’ নামের একটি জাহাজ।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ১২টার পরে সেন্টমার্টিন পৌঁছায় জাহাজটি।
সেন্টমার্টিনে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমির হামজা ও আবদুল করিম বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ঘুরতে এসেছি। আমাদের দলে ২০ জন রয়েছেন। কারও অনলাইন নিবন্ধন করতে হয়নি। কোনো অবতরণ ফিও দিতে হয়নি।’
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে জেটি ঘাটে ভিড় করছেন পর্যটকরা। এসময় কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা তদারকির দায়িত্বে ছিলেন।
জাহাজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সিনিয়র সহ-সভাপতি হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র নিয়ে বুধবার আমাদের জাহাজে ৫১৭ পর্যটক সেন্টমার্টিনে যান। তবে এসব পর্যটকদের কোনো ধরনের অনলাইন নিবন্ধন করতে হয়নি।’
গত ২৩ মে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ঘোষিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন, অবতরণের জন্য ফি এবং দিনপ্রতি ধারণক্ষমতা অনুযায়ী পর্যটকের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ওয়েবসাইট তৈরির কাজ চলমান। তাই আপাতত আগের প্রক্রিয়ায় পর্যটক সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন।
ইউএনও আরও বলেন, বুধবার সকালে জাহাজে করে পাঁচশোর বেশি ভ্রমণকারী সেন্টমার্টিন দ্বীপে গেছেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজগুলো চলাচল শুরু করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট তিনজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা বক্তব্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা নয়ন শীল অনলাইন নিবন্ধনের বিষয়টি পর্যটন মন্ত্রণালয় দেখবে জানিয়ে বলেন, ‘কোনো জাহাজ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেজন্য আমরা তদারকি করছি। প্রথম দিন ৫১৭ যাত্রী নিয়ে বার আউলিয়া জাহাজটি সেন্টমার্টিন গেছেন। এ জাহাজে সাড়ে আটশ যাত্রী ধারণের ক্ষমতা রয়েছে।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনে চলাচলকারী সবধরনের জলযান এবং দ্বীপে খাবারের প্লাস্টিক পাত্র, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক বোতলে যেকোনো ধরনের পানীয়, বহু স্তরের প্লাস্টিকজাত মোড়কসহ, পলিথিন বা একবারের জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিকজাত সব পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, মজুত, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলো। দ্বীপের সৈকত ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জিও ব্যাগ বা পাথর ফেলে বাঁধ নির্মাণ করা যাবে না। এছাড়া দ্বীপে সেমিনার, কর্মশালা, দলবদ্ধ ভ্রমণ, শিক্ষাসফর, গবেষণা, নমুনা সংগ্রহ এবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান পরিচালিত সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম করতে পূর্বানুমতি নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সবশেষ গত মার্চের মাঝামাঝি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেছিল। ওইসময় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন থেকে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, আটলান্টিক, শহীদ আব্দুস সালাম, এমভি পারিজাত, এমভি রাজহংস, সুকান্ত বাবু, এমভি বে ক্রুজ এবং এমভি বার আউলিয়া জাহাজ চলাচল করতো।