শিরোনাম
ভারতীয় একদল হ্যাকারের সাইবার আক্রমণে দেশের ২৫টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করছেন হ্যাকাররা। এর মধ্যে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেসেরও তথ্য ফাঁসে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশে বড় ধরনের সাইবার হামলার হুমকি আসে। ওই হুমকির পর দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়। এ সতর্কতার মধ্যেই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিসে তথ্য ফাঁসসহ বেশ কয়েকটি হামলার অভিযোগ আসে।
যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো হামলার ঘটনার কথা জানায়নি সরকারের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রকল্প বিজিডি ই-গভ সার্ট। এটি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) একটি প্রকল্প।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বিজিডি ই-গভ সার্টের পরিচালক সাইফুল আলম খান বলেন, হ্যাকাররা দাবি করতেই পারেন। আমরা এখনো পর্যবেক্ষণ করছি। তথ্য যাচাই না করা পর্যন্ত বলা যায় না যে সেগুলো আসলেই হ্যাকিং কি না। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
যেসব সাইট বন্ধ রয়েছে, সেগুলো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক সাইটের আপডেটের কাজ হচ্ছে। অনেক সাইট বন্ধ রাখা হয়েছে নিরাপত্তার জন্য।
সাইফুল আলম খান আরও বলেন, আসলে ছয়টি প্রতিষ্ঠানে ডিডস (ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়েল অব সার্ভিস) হামলা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওয়েবসাইট ঠিক করে ফেলেছে। গুরুতর কিছু হয়নি।
ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ওয়েবসাইটে প্রায় ১০ হাজার বিনিয়োগকারী এবং বিনিয়োগ আবেদনকারীর তথ্য রয়েছে। এ সাইটে এখন প্রবেশ করা যাচ্ছে না। এছাড়া এনআইডি সেবা, সুরক্ষা অ্যাপসহ সরকারের বেশি কিছু ওয়েবসাইট বন্ধ ছিল।
ভারতীয় হ্যাকারদের দাবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪০ হাজার রেকর্ডেট তথ্য দখলে নিয়েছে তারা। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি কর পোর্টাল থেকেও কিছু তথ্য ফাঁস করেছে হ্যাকাররা।
আরও যেসব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন পুলিশ ইউনিট, টিকেটিং ওয়েবসাইট ও ব্যাংকের ওয়েবসাইট।
এদিকে, দেশের ১৭টি সরকারি ওয়েবসাইটে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশের হ্যাকিং সংগঠন সাইবার ৭১। সাইবার ৭১ সূত্র জানায়, আমরা তাদের আক্রমণের প্রতিবাদে পাল্টা আক্রমণ চালাবো। যদি এরপরেও তারা দুঃসাহস দেখায় তাহলে অফিসিয়ালি সাইবার যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হবে। আমরা সাইবার যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েই কাজ করবো। ভারতের মতো আমরাও মরোক্কোর সাইবার স্পেসের মাধ্যমেই এর পালটা জবাব দেবো। যাতে আর কখনো বাংলাদেশ সাইবার স্পেসে নজর দেওয়ার দুঃসাহস না করে।
দেশের সাইবারজগতে হামলা চালানোর হুমকি ও গত মাসে তথ্য ফাঁসের ঘটনার পর সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারের আইসিটি বিভাগের কাছে সহায়তা চেয়েছে। কেউ কেউ সাইবার নিরাপত্তা দল গঠন করেছে।
এখন পর্যন্ত তিনটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা দল বা কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) গঠনের কথা জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- নির্বাচন কমিশন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোভুক্ত ২৯টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত এক মাসের মধ্যে আইসিটি বিভাগ তিনটি বৈঠক করেছে। সেখানে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে।