শিরোনাম
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের বিদেশে বিপুল অংকের সম্পদ স্থানান্তর বিষয়ে যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চাইলে আইন অনুযায়ী সে বিষয়ে ‘যা করার করা হবে’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঢাকা সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। সাক্ষাৎ শেষে মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
এস আলম গ্রুপের বিদেশে অর্থপাচার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী করতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশনা) এখন পর্যন্ত পাইনি। যদি এমন কিছু থাকে তাহলে আমরা...। যদি দুদক আমাদের অনুরোধ করে তাহলে আমরা আইনের মধ্যে থেকে যা করার করবো।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশগুলোতে বিপুল অংকের অর্থপাচার হয়ে থাকে। এসব অর্থ দেশে ফেরত আনতে সংশ্লিষ্ট বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের কাছে কোনো ধরনের সহযোগিতা কখনো চাওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, (পাচার অর্থ) ফেরত আনা তো পরের বিষয়। এগুলো কোন রুটে যাচ্ছে, তা আগে বন্ধ করতে হবে। সবই যে অস্বচ্ছ টাকা তা তো না। আমরা অনেক সময় দেখেছি কনাডায় অর্থপাচারের কথা বলা হয়। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে অনেক বাংলাদেশি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আছেন, যারা অনেক কষ্ট করে পয়সা রোজগার করে কানাডায় গিয়েছেন। সুতরাং সেটাও কিন্তু এখানে আছে।
তিনি বলেন, অনেকে এক্সপোর্টের ব্যবসা করেন, সেটির আয়ের একটি অংশ বাইরের বিভিন্ন দেশে থাকে, সেসব অর্থ কতটা অবৈধ আমি জানি না। বাংলাদেশের অনেকে বাবা-মা, দাদা-দাদির জমি বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের সেসব অর্থকে অবৈধভাবে অর্জিত বলা ঠিক হবে না। তবে সেসব অর্থ অবৈধভাবে নাকি আইনসঙ্গতভাবে নেওয়া হয়েছে সে ইস্যুগুলো যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।
মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, ইনফরমেশনের দিক থেকে ওদের (বাইরের দেশগুলোর) সঙ্গে তো যোগাযোগ আছে। আমাদের যে সংস্থাগুলো আছে বাংলাদেশ ব্যাংক ওদের কাউন্টার পার্ট। ওদের সঙ্গে যে খুব একটা সমস্যা আছে তা না। তবে সব দেশের সঙ্গে ইক্যুয়াল পাই না। ছোট ছোট আইল্যান্ড দেশগুলো একটা সিস্টেমই করে রেখেছে, এসব ফান্ডগুলো যেন...।
গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) একটি জাতীয় দৈনিকে ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। গতকাল রোববার প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ওইদিন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ অর্থপাচার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অর্থপাচার ঠেকাতে বিএফআইইউ, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন আদালত।