যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার

ফানাম নিউজ
  ১৫ জুন ২০২৩, ০৪:০৭

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৫৭৪ কোটি ৬৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩০২ টাকা। এর আগে সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪ কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার (১৪ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের এমন/এস এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৪ কোটি ৬৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩০২ টাকা।

এর আগে গত ৩ মে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিঙ্গাপুর থেকে ৩ কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৪৯৭ কোটি ২৭ লাখ ৮ হাজার ৪৭৭ টাকা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক কার্গো এলএনজি ৫১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৭৩১ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর মধ্যে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক ইউএসের এমন/এস এক্সেলারেট এনার্জি এলপির কাছ থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৭৩১ টাকা।

আরও এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৫০৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬৫ টাকা ব্যয়ে এই এলএনজি আমদানি করবে সরকার।

সিঙ্গাপুরের একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরও এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৫৫ টাকা।

এছাড়া সিঙ্গাপুরের অন্য এক প্রতিষ্ঠান এমন/এস গুনভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৫২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৭ টাকা ব্যয়ে ওই এলএনজি আমদানি করা হবে।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৬২ কোটি ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ টাকা।

ওই সভায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরও এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সুইজারল্যান্ডের একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরও এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। মোট ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকায় এসব আমদানি করবে সরকার।

তার আগে ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের একই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ২৬ টাকা।

এছাড়া ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ৬১৮ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার ৪১৯ টাকা। এই এলএনজি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চলতি বছরের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ১২২ টাকা।

তার আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ ধরা হয় ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এর আগে ২০২১ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।

চলতি বছরের আগে পেট্রোবাংলা খোলাবাজার থেকে সর্বশেষ এলএনজি কিনেছিল গত বছরের মে মাসে। তখন প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়েছিল ২৬ ডলার ৪ সেন্ট।

জানা গেছে, এলএনজি আমদানির জন্য বেশ কিছু দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমদানি করতে চায়। এ জন্য ২০১৯ সালে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এমএসপিএ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং দুবাইয়ের চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত হয়।

গ্যাস সংকটের কারণে গত কয়েক বছর বাসাবাড়ির পাশাপাশি শিল্পেও নতুন সংযোগ বন্ধ রাখেছে সরকার। প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট বিবেচনায় ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। সামিট এলএনজি ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জির স্থাপন করা ভাসমান টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।