শিরোনাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক নারী শিক্ষার্থীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা থেকে ঢাবির কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
তথ্য মতে, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, নুরুল হক নুর ১২ অক্টোবর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে তার ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রহীন’ বলেন। ভিডিওতে বাদীর জন্য অপমানজনক, মানহানিকর এবং আক্রমণাত্মক তথ্য প্রকাশ করেন নুর, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরপর চলতি বছরের ৩ অক্টোবর নুরের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের প্রমাণ পায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক ফরিদা পারভীন। আজ (বুধবার) এই মামলা থেকে নুরকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এর আগে পিবিআই এর তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাদিনীকে উদ্দেশ্য করে বিবাদী (ভিপি নুর) কর্তৃক প্রকাশিত দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটির আভিধানিক অর্থ সংগ্রহের জন্য বাংলা একাডেমির পরিচালক বরাবর পত্র পাঠানো হয়। পরে বাংলা একাডেমি দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটি সম্পর্কে মতামত দেয়। সেখানে বলা হয়, বাংলা অভিধানে দুশ্চরিত্রাহীন বলে শব্দের ভুক্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে এ রকম কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় নেই। দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটির অর্থ যদি করা হয় তাহলে এর অর্থ হয় উন্নত চরিত্রের অধিকারী বা সদাচারী বা সৎ স্বভাব বিশিষ্ট।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নুরুল হক নুরের ফেসবুক আইডি ডিজিটাল ফরেনসিক টিমের মাধ্যমে পরীক্ষা করে মতামত নেওয়া হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, নুরুল হক ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর বাদীকে উদ্দেশ্য করে ‘ছি! আমরা ধিক্কার জানাই এত নাটক যে করছে, সে দুশ্চরিত্রাহীন। ধর্ষণের নাটক করছে স্বেচ্ছায় একটি ছেলের সঙ্গে বিছানায় গিয়ে’ নামে যে বক্তব্যটি প্রচার করেছেন বলা হয়েছে এমন কোনো বক্তব্য তার ফেসবুকে পাওয়া যায়নি। এ জন্য নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (১)ক, ২৯(১) ৩১(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।
এদিকে একই ছাত্রী নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগ এনে কোতোয়ালী ও লালবাগ থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন। ওই দুই মামলায়ও নুরের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।