শিরোনাম
করোনা মহামারির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে আরও নেতিবাচক প্রভাব। প্রভাব পড়েছে দেশের রাজস্ব আদায়েও। আমদানি ও রপ্তানি রাজস্ব, মূল্য সংযোজন কর ও আয়কর আদায়ে ধস নেমেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটে আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করায় শুল্ক আদায়েও নেমেছে ধস। এ অবস্থায় চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই- মার্চ) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকায়।
যদিও বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি-রপ্তানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও আয়কর আদায় খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই তিন খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআরকে আদায় করতে হতো ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে এনবিআর রাজস্ব আদায় করেছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আহরণের গড় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত পাঁচ বছর রাজস্ব আহরণের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে ২ লাখ ৮ হাজার ২৩৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আমদানি-রপ্তানি খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আদায় হয়েছে ৬৭ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। ফলে ৯ মাসে এখাতে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা। মাস হিসেবে গত মার্চে কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে।
আয়করে ৯ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৭১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ আয়করে ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে মূসক (মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে এ খাতে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। এ হিসাবে ৯ মাসে ভ্যাট আদায়ে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।