শিরোনাম
ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এশীয় অঞ্চলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বমানের ওষুধ উৎপাদন করে আফ্রিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি করছে। ওষুধ ছাড়া আরও অনেক পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। শিগগির বাংলাদেশ এ অঞ্চলে বাণিজ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এগিয়ে যাবে নতুন দিগন্তে। নতুন নতুন পণ্য ও সেবার উদ্ভাবন আমাদের রপ্তানির ঝুড়ি আরও সমৃদ্ধ করবে। পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা আহরিত হবে এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ একটি আত্মনির্ভরশীল স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত হবে।
টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে দেশ স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।ফলে প্রাথমিকভাবে আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বিগত পাঁচ দশক দেশের রপ্তানি সম্প্রসারণে যেভাবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের এ প্রচেষ্টা আরও বেগবান হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের উত্তরোত্তর প্রসার ঘটাতে ভূমিকা রাখবে। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে এবং রেখে চলেছে। বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে সরকার ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করছে।
দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের ফলে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, এতে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হয়, অন্যদিকে বেকারত্ব হ্রাস পায়। দেশটা আমাদের সবার। উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীরা শুধু লাভের আশা না করে দেশের নানা খাতে অবদান রাখেন বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের ফলে যেসব মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এসব প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে দেশের অবকাঠামগত এবং সার্বিক অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখন তা বাস্তবায়নের পথে।
জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিজয়ী সব রপ্তানিকারককে অভিনন্দন জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রপ্তানিতে রপ্তানিকারকদের স্বীকৃতির পাশাপাশি এ ট্রফি রপ্তানি খাতে একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৮টি পণ্য খাতে ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান করা হয়। যার মধ্যে ২৮টি স্বর্ণ, ২৫টি রৌপ্য এবং ১৭টি ব্রোঞ্জ ট্রফি। এছাড়া রপ্তানি খাত নির্বিশেষে সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে সেরা রপ্তানিকারক হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি (স্বর্ণ)’ প্রদান করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এছাড়া জাতীয় সংসদ সদস্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা প্রধান এবং ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।