শিরোনাম
রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ফিটনেসবিহীন ক্রেনটির সক্ষমতা ছিল ৪৫-৫০ টন। অথচ ক্রেনে যে গার্ডারটি ছিল সেটির ওজন ছিল ৬০-৭০ টন।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি সরবরাহ করে। ১৯৯৬-৯৭ সালের দিকে ক্রেনটি আনা হয়েছিল। প্রথম দিকে ক্রেনটির সক্ষমতা ছিল ৮০ টন। পরে আস্তে আস্তে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে ৪৫-৫০ টন হয়। এছাড়া ২০২১ সালে সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়, এরপর ক্রেনটির আর ফিটনেস যাচাই করা হয়নি । অতিরিক্ত ভার বহন করায় ক্রেনটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের গার্ডার শিফট করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিত ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিত ছিল।
খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর তারা স্বীকার করেন দুর্ঘটনার সময় ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী রাকিব হোসেন (২৩)। এ সময় তাকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন চালক আল আমিন।ক্রেনটির মূল চালক আল আমিনের লাইসেন্স ছিল হালকা যান চালানোর, ভারী যানের নয়।
এর আগে এ ঘটনায় ক্রেনচালকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বুধবার (১৭ আগস্ট) রাতে র্যাবের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ক্রেনচালক, চালকের সহকারী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীও রয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহত হন। ওই গাড়িতে থাকা নবদম্পতি গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। হতাহতরা ঢাকায় একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।
নিহতরা হলেন- আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল (৫৫), ফাহিমা আক্তার (৩৮), ঝরনা আক্তার (২৭), জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪)। আহত নবদম্পতি হলেন হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১)। দুজনেই উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার রাতেই নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝরনা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।