শিরোনাম
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডেবায় নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী। এ তাঁতপল্লী ঘিরে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। পদ্মাসেতু এলাকায় প্রথম পর্যায়ে এ তাঁতপল্লীর মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীরের কাজ শেষ হবে ৩০ জুনের মধ্যে। প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ১ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ব্যয়ে তাঁতপল্লী নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, তাঁত শিল্পের উন্নয়নে পদ্মার পাড়ে দেশের সবচেয়ে বড় তাঁতপল্লী স্থাপন করছে সরকার। নাম রাখা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’। মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীরের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে ৩০ জুন। পদ্মাসেতুর শরীয়তপুর প্রান্তের রেলস্টেশনের কাছাকাছি নির্মাণ করা হচ্ছে এ তাঁতপল্লী। যাতে এখানকার তাঁতীরা কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত পণ্য সহজে আনা-নেয়া করতে পারেন।
শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা মৌজায় ৫৯ দশমিক ৭৩ একর ও মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর মৌজায় ৬০ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’। এ প্রকল্পের আওতায় তাঁত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কারখানার পাশাপাশি কর্মরত তাঁতীদের জন্য রাখা হয়েছে আবাসন ব্যবস্থা।
তাঁতীদের কর্মসংস্থান, দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, বাজারজাতকরণ, পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাঁত বস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে তাঁতীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই এ তাঁতপল্লী গড়ে উঠছে। প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজার ৬৪টি তাঁত শেড নির্মাণ করা হবে। যেখানে ৮ হাজার ৬৪ তাঁতীকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে। বার্ষিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ দশমিক ৩১ কোটি মিটার কাপড়।
তাঁতপল্লী এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের মাঝে দেখা গেছে ব্যাপক আশা ও কর্মচাঞ্চল্য। নাওডোবা ইউনিয়নের বাসিন্দা দুদু মিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’র পাশেই আমাদের বাড়ি। তাঁত পল্লী চালু হলে এখানে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
ব্যবসায়ী চুন্নু আকন বলেন, পদ্মা পাড় প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় আগে উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া লাগেনি। পদ্মাসেতুর কাজ শুরু হওয়ার পরই পাল্টে যেতে থাকে এলাকার উন্নয়নের চিত্র। এখানে নির্মাণ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তাঁতপল্লী। এখনই পদ্মাসেতু দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করছেন। তাঁতপল্লী নির্মাণ হলে সবসময় এ এলাকা জমজমাট থাকবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে হাজারো মানুষের।
‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খোকন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার চিন্ময় সরদার বাপ্পী বলেন, এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীরের কাজ ৩০ জুন শেষ হবে। আমরা গুণগত মান ঠিক রেখেই কাজ শেষ করতে পারব। জুলাইতে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’ দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস। এর ফলে উন্নত হবে দেশের তাঁতশিল্প। স্থানীয়দের পাশাপাশি জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে তাঁতীদের। ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’ নির্মাণ কাজ শেষ হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল কর্মসংস্থান হবে। দেশে তাঁত বস্ত্রের উৎপাদনও বাড়বে কয়েকগুণ।