ঝড়ে উড়ে গেল বই, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পাশে ইউএনও

ফানাম নিউজ
  ২০ মে ২০২২, ০৮:৪০

সোমবার রাতে নিয়ামতপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের একটি আদিবাসীপাড়া। উড়ে যায় ঘরবাড়ি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১২-১৩টি পরিবার।

প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে উড়ে যায় তাদের ঘরের চালা, ভেঙে পড়ে মাটির কাঁচাবাড়ি। এছাড়াও উড়ে যায় শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই। এ নিয়ে ১৮ মে গণমাধ্যমে “এক মাস পর এসএসসি, ঝড়ে উড়ল জামিতার সব বই” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনটি প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে দৃষ্টিগোচর হলে শুরু হয় খোঁজখবর। এর আগে সংবাদ পেয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেন। 

সম্প্রতি সরকারি ত্রাণ নিয়ে আদিবাসীপাড়ায় ছুটে আসেন ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন। সাথে আসেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট রসুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোতাল্লিব হোসেন বাবর। তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেন। 

এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান মোতাল্লিব হোসেন বাবর তার ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে এসএসসি প্রস্তুতি নেওয়া তিন শিক্ষার্থী জামিতা, স্বপন ও দুর্জয়কে তাদের ঝড়ে পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বই খাতা কেনার জন্য প্রত্যেককে ৫ হাজার করে টাকা প্রদান করেন। আর বিজয় সরেন নামের এক প্রতিবন্ধীকে চার হাজার টাকা প্রদান করেন। 

বই-খাতা কেনার টাকা পেয়ে এসএসসির প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীরা দারুণ খুশি। জামিতা ও স্বপন জানায়, পড়ালেখাসহ এসএসসির প্রস্তুতি নিয়ে তাদের যে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল তা এখন আর নেই। ঘরের ছাদ ফাঁকা থাকলেও এখন থেকে তারা আবার এসএসসি পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেবে। 

তবে সরকারি ত্রাণসামগ্রী পেয়ে কিছুটা খুশি হলেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি ক্ষতিগ্রস্তরা। তাদের দাবি, যেহেতু তারা গরিব ও খেটেখাওয়া মানুষ। তাই এই মুহূর্তে বাড়ি সংস্কার করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তাই সরকারের কাছে বাড়ি সংস্কারের জোর দাবি তাদের।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কর্তা ফিলিপ জানান, সরকারি ত্রাণ পেয়েছেন। কিন্তু মাথার উপর এখনো খোলা আকাশ তাদের। বৃষ্টি হলেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভিজতে হবে। এছাড়াও স্কুলপড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের খুব কষ্ট হবে তখন। তিনি দ্রুত বাড়িঘর সংস্কারের আকুতি জানান।

ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি ঝড়ে কবলিত ক্ষতিগ্রস্ত পাড়াটি পরিদর্শন করেছেন। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও খাদ্যসমগ্রী দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাদের বাড়ি সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।