বাংলাদেশর ঝোড়ো বলিংয়ে ৩৬৭ রানে থামালো দক্ষিণ আফ্রিকা

ফানাম নিউজ
  ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৯:০৯

শুরু হয়েছে দলীয় বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচ। তিনশ হওয়ার আগেই ৮ উইকেট তুলে নিয়ে স্বস্তিতে ছিলো বাংলাদেশ দল। 

মনে হচ্ছিল, বেশি দূর যেতে পারবে না স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু লেজের সারির ব্যাটারদের দৃঢ়তায় শেষ দুই উইকেটে আরও ৬৯ রান পেয়েছে তারা।

ডারবানের কিংসমিডে স্বাগতিকদের শেষ পর্যন্ত ৩৬৭ রানে থামাতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। যা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের পেসারদের সেরা বোলিং। অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার তিন উইকেট।

আগেরদিন ৭৬.৫ ওভারে করা ৪ উইকেটে ২৩৩ রান নিয়ে আজকের খেলা শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের ৮০ ওভার যেতেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় বাংলাদেশ। আর নতুন বল পেয়েই আগুন ঝরান ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

ইনিংসের ৮৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কাইল ভেরেনকে পরাস্ত করেন টাইগার পেসার। তার নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারি প্রোটিয়া ব্যাটারের প্যাডে লাগলে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। ২৮ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ভেরেন।

পরের বলে উইয়ান মালডারকে ‘গোল্ডেন ডাক’ দেখান খালেদ। এবার ব্যাটে বল লেগে চলে গিয়েছিল গালিতে, ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন মাহমুদুল হাসান জয়। তৈরি হয় হ্যাটট্রিকের সুযোগ। তবে হ্যাটট্রিক বলে নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন মহারাজ।

শুধু সেই হ্যাটট্রিক বলও নয়, বাভুমার সঙ্গে মিলে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় উইকেটে কাটিয়ে দেন এ বাঁহাতি স্পিনার। সুযোগ যে আসেনি তা নয়। ইনিংসের ৯২তম ওভারে এবাদতের বাউন্সারে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন বাভুমা। কিন্তু সেটি তালুবন্দী করতে পারেননি ইয়াসির রাব্বি।

মনে হচ্ছিল, বাভুমা-মহারাজের জুটিতেই দলীয় তিনশ পার করে ফেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তখনই জাদু নিয়ে আসেন মিরাজ। ইনিংসের ৯৬তম ওভারে আক্রমণে এসে ৯৮তম ওভারেই সাফল্যের দেখা পান তিনি। তার শার্প টার্নের ডেলিভারিতে বোল্ড হন ৯৩ রান করা বাভুমা।

পরের ওভারের প্রথম বলে আরেক সেট ব্যাটার মহারাজের স্ট্যাম্প ছত্রভঙ্গ করেন এবাদত। আউট হওয়ার আগে ৪০ বলে ১৯ রান করেন লেজের সারির এই ব্যাটার। পরপর দুই ওভারে দুই উইকেটের পতনে স্বস্তি ফিরে আসে টাইগার শিবিরে।

এরপর সেশনের বাকি সময়টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন দুই বোলার সাইমন হার্মার ও লিজাড উইলিয়ামস। অবশ্য সাফল্যের সুবাস পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১০৩তম ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের সিদ্ধান্তে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান লিজাড।

সেই রিভিউ নিয়েও হয় একপশলা নাটক। এবাদতের করা লেগ স্ট্যাম্প লাইনের ডেলিভারি ব্যাটে লাগাতে পারেননি লিজাড। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে লম্বা সময় চিন্তা করে আউটের সিদ্ধান্ত জানান আইসিসির সেরা আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস।

তবে রিভিউ নেন লিজাড। রিপ্লে’তে দেখানো হয় বলটি কি না পড়েছে লিজাডের অফস্ট্যাম্পের বাইরে! তাই প্রথমে একবার তিন রেডসহ আউট দেখানো হয় লিজাডকে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই টেকনোলজির এই গড়ল শুধরে নেন আম্পায়ার।

ঠিক করার পর দেখা যায় বলটির পিচিং ছিল লেগস্ট্যাম্পের বাইরে। তাই উইকেটবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ, রাগে ফুঁসতে থাকেন এবাদত। সেশন শেষে হার্মার ২০ বলে ৮ ও লিজাড ২১ বলে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। পরে দ্বিতীয় সেশনের তৃতীয় ওভারে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এ জুটি ভাঙেন খালেদ।

পয়েন্টে দাঁড়ানো জয় বাম দিকে ঝাঁপিয়ে লিজাডের দারুণ এক ক্যাচ ধরেন। আউট হওয়ার আগে ১২ রান করেন তিনি। এই উইকেটের সুবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখান খালেদ।

এরপরও মেলেনি স্বস্তি। শেষ উইকেট জুটিতে ৩৫ রান যোগ করেন হার্মার ও ডুয়াইন অলিভার। দুজনই খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। অলিভারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে প্রোটিয়াদের অলআউট করেন মিরাজ। তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। হার্মার অপরাজিত থাকেন ৩৮ রান করে।

সূত্র: জাগো নিউজ