শিরোনাম
সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জেলা বিএনপির আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা এটিকে নতুন মেরুকরণ হিসাবে দেখছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আদৌ আরিফ সম্মেলনে প্রার্থী হবেন কিনা তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। সিটি মেয়রের প্রার্থী হওয়ার খবরে জেলার শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের তৎপরতা আরও জোরদার করেছেন। দীর্ঘ ২৯ মাস ধরে সিলেট জেলা বিএনপি চলছে তিন মাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে।
সিলেট জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিন মাসের এই কমিটি ২৯ মাস পার করে দিয়েছে। শিগগিরই সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে। সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসাবে ইতোমধ্যে জেলার অধীন থাকা ১৮টি ইউনিটের মধ্যে ১৫টির কাউন্সিল সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি ৩ ইউনিটের কাউন্সিল দ্রুত শেষ করেই জেলা বিএনপির সম্মেলনের জন্য তারিখ চাওয়া হবে কেন্দ্রে। জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, কমিটির শীর্ষ পাঁচ পদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে।
সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কেউ কেউ তৃণমূল পর্যায়ে চালিয়ে যাচ্ছেন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে সভাপতি পদ পেতে তৎপর রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক। এ ছাড়াও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর এই তালিকায় আরও একাধিক নাম যুক্ত হতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, আবদুল আহাদ খান জামাল ও সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম এবং জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এমএ মান্নান। এদিকে, সম্মেলনের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তৎপরতা বৃদ্ধি করছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ দুটি পদপ্রত্যাশীরা। সম্প্রতি সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জেলা বিএনপির সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন এমন গুঞ্জনে নতুন করে হিসাব কষতে হচ্ছে তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের। বিষয়টি দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে মুখে আলোচনায় থাকলেও জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রার্থী হওয়া বিষয়টি পরিষ্কার করেননি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। এখানে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। কারা দলের জন্য নিবেদিত, দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন তা কাউন্সিলররা বিবেচনা করবেন। তবে জেলা বিএনপির সম্মেলনে আরিফের প্রার্থিতার বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত তার অনুসারীরা। তাদের মতে মেয়র আরিফ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। এখন উচিত এসব পদে নতুনদের সুযোগ দিয়ে নিজেকে কেন্দ্রের একটি ভালো পদে অধিষ্ঠিত করা। এ ছাড়া তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে আরিফের যে একটি দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটিও তুলে ধরছেন তারা। সবকিছু মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়র আরিফ জেলা বিএনপির সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হবেন কিনা, সেটা জানার জন্য সম্মেলনের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্র: যুগান্তর