শিরোনাম
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রায় চার কোটি টাকার টেন্ডারের সিডিউল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপনের হাত থেকে প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে ছিনিয়ে নিয়েছে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া।
মঙ্গলবার দুপুরের এ ঘটনায় ধারণ করা ভিডিও এখন নাটোরের প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ঘটনার সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে যুবলীগ সভাপতির সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের টানাহেঁচড়া ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। হাসপাতালজুড়ে এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে জেলা ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে সোমবার দুপুরেও বগুড়ার আলিয়া করপোরেশন নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে সিডিউল ক্রয় করে বের হওয়ার সময় জেলা যুবলীগ সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া ছিনিয়ে নেয়।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের ওষুধ, মেডিকেল ও সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, গজ, বান্ডেজ, তুলা ইত্যাদি কেনার জন্য এই টেন্ডার আহবান করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত মোট ১৮টি সিডিউল বিক্রি করেছে। এই সিডিউল ক্রয় এবং জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী ৩ অক্টোবর।
নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ছয়টি গ্রুপের দুটি কাজের টেন্ডার সিডিউল ক্রয় করি। পরে সিডিউল ক্রয়ের খবর পেয়েই জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া দলবল নিয়ে আমাকে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে প্রকাশ্যে ঘিরে ধরে। আমাকে শিডিউল উত্তোলন এবং জমা দিতে নিষেধ করে। কিন্তু আমি শিডিউল ক্রয় করে বের হওয়ার সময় এহিয়া চৌধুরী সবার সামনে প্রকাশ্যে টানাহেঁচড়া করে সিডিউল ছিনিয়ে নিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য অনেক চেষ্টা করেও জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির অনুসারী এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের অনুসারী নেতা। তাদের দুজনের কেউ সরাসরি এই টেন্ডারের সিডিউল কিনতে যাননি। তারা অন্য দুটি পক্ষের হয়ে হাসপাতালে অবস্থান নিলে আজকের এ ঘটনা ঘটে।
নাটোর সদর থানার ওসি মুনসুর রহমান জানান, মৌখিকভাবে টেন্ডারের সিডিউল ছিনতাইয়ের কথা শুনে হাসপাতালে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। পরিস্থিতি শান্ত করেছে। তবে বিকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ থানায় দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. পরিতোষ কুমার রায় বলেন, এ বিষয়ে কেউ তার কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। তাছাড়া টেন্ডারের শিডিউল ক্রয় করে নিয়ে যাওয়ার পর বাহিরে কোনো ঘটনা ঘটলে এটা আমাদের দেখার এখতিয়ারও নেই। সূত্রঃ যুগান্তর