শিরোনাম
যাত্রা শুরুর দু’যুগে এসে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য যেন বিনোদন অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক। সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া বাকি ৬ দিন দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস মিশে যায় প্রাণীকূলের কোলাহলের সঙ্গে।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১৯টি বেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত আছে বিচিত্রসব প্রাণী। পার্কের ভেতরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় উন্মুক্ত ও আবদ্ধভাবে রয়েছে হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তি, গয়াল, আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, ভাল্লুক, বন্য শুকর, হনুমান, ময়ূর, স্বাদু ও লোনা পানির কুমির, সাপ, বনগরুসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির প্রাণী। রয়েছে নাম জানা-অজানা বিচিত্র কয়েকশ ধরনের পাখি। গাছে গাছে বানরের লাফালাফি নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। বিশেষ করে পুলকিত হয় শিশুরা।
তবে সিংহভাগ প্রাণী নির্দিষ্ট বেষ্টনীতে থাকলেও পুরো পার্ক জুড়েই যেন রয়েছে হরিণের রাজত্ব। প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে এলেই বনে দেখা মেলে চিত্রা, মায়া, সম্বর ও প্যারা হরিণ। পিচঢালা পথে এক বেষ্টনী থেকে অন্য বেষ্টনী যেতে গিয়ে সামনে পড়ে যায় শাবকসহ মা হরিণ। পার্কের জলাশয়ের ধারে নির্ভয়ে ঘাস ও লতাপাতা খেতে আসে প্যারা হরিণ।
জলহস্তির বেষ্টনীর আশপাশে ঘুরে বেড়ায় বিপুল সংখ্যক চিত্রা হরিণ। বাঘ-সিংহের বেষ্টনীর উত্তরপাশে দর্শণার্থী দেখলেই কলা বা অন্য খাবারের আশায় কাছাকাছি আসে চিত্রা হরিণের পাল।
পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, পার্কে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী রয়েছে। কোন প্রাণী কয়টা আছে তার নির্দিষ্ট হিসাব বলা গেলেও পার্কজুড়ে হরিণের সংখ্যা কত তা সঠিক বলা যাবে না। কারণ পার্কের প্রতিটি বেষ্টনী এলাকাতেই কমবেশি হরিণের অবস্থান রয়েছে। প্রায়ই বাচ্চা দিচ্ছে মা হরিণ। পার্কের পাখি বেষ্টনী এলাকা, হাতি বিচরণ ক্ষেত্র, জলহস্তির এলাকাসহ সামনের অংশে বনের পথে হাঁটলে যেকোনো সময় চোখে পড়বে হরিণের বিচরণ।
এছাড়াও বাঘ-সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণীর সাফারি এলাকাতেও রয়েছে হরিণের অবস্থান। বলতে গেলে পুরো পার্কই হরিণের রাজ্য বলা চলে। পরিচর্যা ও দেখভালে আমরা হরিণের প্রজনন বাড়ানোর প্রচেষ্টায় রয়েছি। বাঘ-সিংহ সাফারিতে দেওয়া হলে এখনকার মতো গরুর মাংস সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কারণ কখন এসব প্রাণি কোথায় অবস্থান করে বলা যাবে না। তাদের ক্ষুধা মেঠাতে হরিণ শিকার করেই খাবে এসব প্রাণীগুলো। তাই হরিণের সংখ্যা বাড়াতে আমাদের প্রচেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় ১৯৯৯ সালে পথচলা শুরু হয় এ সাফারি পার্কের। ভেতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। শুরু থেকেই সবুজের মনজুড়ানো পরিবেশে পার্কটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের সহায়ক ও আশপাশের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার ক্লান্তি প্রসমণের উপলক্ষ্য।
সূত্র: জাগো নিউজ