শিরোনাম
কক্সবাজার উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। শনিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ সংক্রান্ত প্রস্তুতিবিষয়ক কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাতাসের গতিবেগ কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়ার যে শঙ্কা ছিল সেটি আর হচ্ছে না। এটি এখন অতি প্রবল (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন) ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকছে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনও কোনো ঘোষণা দেয়নি। ওয়েবসাইটে ও নেই নতুন তথ্য। এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের পর্যালোচনা করতে সময় লাগছে। সবগুলো প্রক্রিয়া শেষ করে ১৫ নম্বর বুলেটিন প্রস্তুতের করা হবে। খুব দ্রুত এটি ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
এর আগে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলে ‘মোকা’র প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে। একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। এছাড়া প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে তবে, ঢাকায় কম হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘মোকা’ বঙ্গোপসাগরে যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এর শক্তি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এটা শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। ‘মোকা’র দমকা বাতাসের সঙ্গে যে ঝড়ো হাওয়া বইছে তার সঙ্গে সিডরের কিছুটা মিল আছে।
বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে সেটি সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। ৮৮ থেকে ১১৭ পর্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড়, ১১৭ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে বইলে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং বাতাসের গতি ২২০ কিলোমিটার পার হলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ১৪ মে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। শনিবার রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।