শিরোনাম
আমদানিকারকরা পণ্য ডেলিভারি না নেওয়ায় কনটেইনার জটের কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ডে জমেছে ৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার।
গত মার্চের জমা ছিল প্রায় ৩৫ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। এখন বিভিন্ন ইয়ার্ডে সবমিলিয়ে প্রায় ৪৪ হাজার কনটেইনার জমে আছে। যেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর তুলনায় আমদানিকারকদের খালাসের পরিমাণ কমে যাওয়ায় কনটেইনার জটের তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, আমদানিকারকরা পণ্য ছাড় করলেও তা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে। জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোর বিপরীতে কনটেইনার খালাসের পরিমাণ কম হওয়ায় ইয়ার্ডে কনটেইনার জটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমদানিকারকেরা দ্রুত পণ্য ডেলিভারি না নিলে কনটেইনার জটের পাশাপাশি জাহাজ জট হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে ৪৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতা রয়েছে। তবে ইয়ার্ডে ইতোমধ্যে ৪৪ হাজার কনটেইনার জমা রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার টিইইউএস কনটেইনার পণ্য খালাস হতো সেখানে এখন তার পরিমাণ এখন গড়ে দেড় থেকে ২ হাজার টিইইউএস কনটেইনারে নেমে এসেছে। গত ৩০ এপ্রিল ৩ হাজার ৩শ কনটেইনার পণ্য ছাড় হলেও এরপর ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে ছাড়ের পরিমাণ। ১ মে ২৯শ, ২ মে ১ হাজার ৬৮, ৩ মে মাত্র ২২৭, ৫ মে ৭শ, ৬ মে ১ হাজার ৯০, ৭মে ১৫শ, ৮ মে ২৫শ, ৯ মে ২৭শ ও ১০ মে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি টিইইউএস কনটেইনার পণ্য ছাড় হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ৬০টিরও বেশি জাহাজ অবস্থান করছে। এরমধ্যে ২০টির মত জাহাজে পোশাক কারখানার আমদানি করা কাঁচামাল রয়েছে। বাকিগুলোতে সিমেন্ট, চিনি, তেল রয়েছে বলে জানা গেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দর ব্যবহারকারীরা যথাসময়ে পণ্যছাড় করে নিলেই এ ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হতো না। অধিকাংশ কনটেইনারে পোশাকসহ বিভিন্ন কারখানার পণ্য রয়েছে।
বিজিএমইএ বলছে, কারখানার প্রয়োজনেই বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই পণ্য ছাড় করে কারখানার গুদামে নিয়ে যাওয়া হবে।
পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার কারখানাগুলো খুলেছে। কারখানা মালিকরা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে পণ্য ছাড় করে নিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই পণ্য ছাড়ের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। কারণ কারখানাগুলোতে কাজের গতি বাড়ছে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পণ্যগুলো বন্দর থেকে ছাড় করে নেওয়া যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের দিক থেকে আমরা যথেষ্ট সচেতন রয়েছি। তবে বন্দর ব্যবহারকারীদের আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে। বন্দর থেকে আমদানিকারকদের পণ্য ছাড়ের পরিমাণ বেড়ে গেলে কনটেইনার বা জাহাজজট বাড়ার কোন সম্ভবনাই থাকে না। আমরা এখন বন্দর ব্যবহারকারীদের পণ্য ছাড়ের বিষয়ে তাগিদ দিচ্ছি।
সূত্র: আরটিভি