দৌলতদিয়ায় যাত্রী কম, বেড়েছে ট্রাকের চাপ

ফানাম নিউজ
  ০৮ মে ২০২২, ১৩:০৭

দৌলতদিয়ায় ঢাকার কর্মস্থলমুখী দক্ষিণাঞ্চলের ঈদ ফেরত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা কমলেও বেড়েছে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ। 

ফলে মহাসড়কে প্রায় সাত কিলোমিটার যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে যাত্রীবাহী বাস, পচনশীল ও অপচনশীন পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ড ভ্যান রয়েছে।

রোববার (৮ মে) সকাল ৮টার দিকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়ক এবং গোয়ালন্দ মোড়ের কুষ্টিয়ামুখী আঞ্চলিক সড়কে এ চিত্র দেখা যায়।

গত কয়েক দিনের তুলনায় অবশ্য কমেছে ঢাকামুখী যাত্রীবাহী বাস, বেড়েছে ছোট গাড়ি ও মোটরসাইকেল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ২১টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া থেকে ৮ হাজার ৩৯০টি যানবাহন ফেরিতে পার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিমুলিয়া ঘাট প্রায় বন্ধ থাকায় এবার এ ঘাটে চাপ তিন গুণ বেড়েছে। ওই ঘাট ঠিকমতো চালু থাকলে ঈদের সময় দৌলতদিয়া পাটুরিয়ায় প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ছয়- সাড় ছয় হাজার গাড়ি পার হতো। কিন্তু এবার সেখানে ৮-৯ হাজার গাড়ি পার করতে হয়েছে। যার কারণে চাপ অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়েছে।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে শনিবার মধ্যরাতে এসে এখনও ফেরির দেখা পায়নি অনেক যাত্রীবাহী বাস। এতে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে হয়ে পড়েছেন বাসে থাকা নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা।

অন্যদিকে, দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও ফেরিতে উঠতে না পারায় পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের চালকরা পড়েছেন বিপাকে। সময়মতো মালামাল পরিবহন করতে না পেরে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এ সময় তরমুজবাহী একটি ট্রাক থেকে পানিও পড়তে দেখা যায়।

তরমুজ ব্যবসায়ী ছবদুল মিয়া বলেন, বরগুনা থেকে ট্রাকে তরমুজ নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। রাত ২টায় দৌলতদিয়া এলাকায় এলেও দুপুর ১১টা বাজে। এখন পর্যন্ত ফেরি পাইনি। দুই লাখ টাকা মাল কেনা, এরপরও গাড়ি ভাড়া। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না। এদিকে তরমুজও নষ্ট হচ্ছে।

আলমগীরসহ একাধিক ট্রাকচালক বলেন, তারা বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু রাতে গোয়ালন্দ থেকে যানজট ঠেলতে ঠেলতে ঘাটের দিকে এসেছেন। তবে ফেরিঘাট এখনও কয়েক কিলোমিটার দূরে। গরমে তরমুজ ফেটে পানি পড়ছে। সময়মতো মাল না পেয়ে পার্টি রাগারাগি করছে।

ঢাকামুখী যাত্রী আসলাম, তোরাব, রাসেলসহ অনেকে বলেন, দৌলতদিয়ায় ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। দীর্ঘ আট ঘণ্টা ধরে ফেরির অপেক্ষায় আছি। গরম আর সহ্য হচ্ছে না। খাবার ও টয়লেটের ভালো ব্যবস্থা নেই। যে সময় হিসাব করে বাসা থেকে বের হয়েছি, সে হিসাবে যেতে পারছি না।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাত ২টার দিকে এসে ১১টার দিকে ফেরিঘাটের কাছাকাছি এসেছি। গরমে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ফেরি ভালোভাবে চললে এ রকম সিরিয়ালে থাকতে হতো না। ওরা বলে ( বিআইডাব্লিউটিসি) ২১ টি ফেরি চলে, আসলে ১৬-১৭টির বেশি ফেরি এ ঘাটে কখনো চলে না। তবে ২১টি ফেরি ঠিকমতো চললে ঘণ্টায় হাজারটি গাড়ি আসলেও কোনো জ্যাম হতো না।

বিআইডব্লিউটিসির ঘাট ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, গত রাত থেকে এ নৌরুটে ২১টি ফেরি চলাচল করছে। রোববার সকাল থেকেই মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও যাত্রীর চাপ কম রয়েছে। দুপুর ১১টায় ঘাটের রাস্তায় সাড়ে তিন শ বাস রয়েছে। তবে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ থাকলেও আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ি পার করছি। আশা করা যায়,

দুপুর পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসের চাপ স্বাভাবিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: আরটিভি