চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩

ফানাম নিউজ
  ২০ এপ্রিল ২০২২, ০৭:৫১

চট্টগ্রামের পটিয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবলীগ নেতাসহ এক পক্ষের তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০টার দিকে পটিয়ার আমজুর হাটে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। গুলিবিদ্ধরা হলেন, পটিয়া পৌরসভা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডি এম জমির উদ্দিন (৪২), যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম ওরফে বালু সাইফুল (৩৫) ও যুবলীগ কর্মী মো. ইকবাল হোসেন (৪০)।

গুলিবিদ্ধ তিনজনকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, আমজুর হাটে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল উপজেলার গৈড়লার টেক এলাকায় জাহিদ হাসান হৃদয় নামের এক গাড়িচালকের সঙ্গে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও যুবলীগ নেতা এয়ার মুহাম্মদ বাবরের প্রকাশ ঝাপ্টা বাবরের মধ্যে মারামারি হয়। এতে গাড়িচালক হৃদয় আহত হন।

এ ঘটনায় আহত চালক হৃদয় পটিয়া থানায় মামলা করেন। থানায় মামলা হওয়া ও আহত গাড়ি চালককে সহযোগিতা করার কারণে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ ও তার অনুসারীদের ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বাবর ক্ষুব্ধ হন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন এয়ার মুহাম্মদ বাবর যুবলীগ নেতা লিটন বড়ুয়ার নেতৃত্বে পটিয়ায় রাজনীতিতে সক্রিয় ও শাহাদাত হোসেন সবুজ চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাবরের বিরোধ রয়েছে। অন্যদিকে সাবেক যুবলীগ নেতা ডিএম জমির উদ্দিন পটিয়ার সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়গুলোত সভা-সমাবেশে হুইপ বিরোধী নানান বক্তব্যও দেন ডিএম জমির উদ্দিন।

এদিকে চেয়ারম্যান সবুজের সঙ্গে পেরে না উঠে গত কয়েকদিন আগে ডিএম জমির উদ্দিনের সঙ্গে হতে মেলান ইউপি সদস্য বাবর। মঙ্গলবার রাতে ডি. এম জমির ও বাবর তাদের অনুসারীদের নিয়ে আমজুর হাট এলাকায় শোডাউন দেয়। এসময় প্রতিপক্ষরা এগিয়ে এলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। প্রতিপক্ষের লোকজন ডিএম জমির ও বাবরের লোকজনকে ঘেরাও করে বেধড়ক পেটান। একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন ডিএম জমির উদ্দিনসহ তিনজন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির তদারককারী কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পটিয়া আমজুর হাট থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবলীগ নেতাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ইফতার পার্টিতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দাওয়াত দিয়ে আসার সময় শিবির সোহেল, ছোট লিটনসহ ১০-১২ জন আগে থেকে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। হামলাকারীদের শটগানের গুলিতে তারা আহত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, আমজুর হাট এলাকায় স্থানীয়রা কয়েকজনকে পিটুনি দিয়েছে শুনেছি। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কী না জানি না।

এয়ার মোহাম্মদ বাবরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, এয়ার মোহাম্মদ বাবর একজন গাড়িচালককে তুলে নিয়ে পিটিয়েছে। ওই চালক থানায় মামলা করেছে। এখন আমজুর হাট এলাকায় পটিয়া থেকে লোকজন এনে শোডাউন দিতে এলে স্থানীয় লোকজন তাদের পিটিয়েছে।

পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ গ্রেফতার নেই বলে জানান ওসি।