শিরোনাম
সুনিল নারিনের ঝড়ে ফাইনালের শুরুটা ঠিক ফাইনালের মতোই করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পাওয়ার প্লে'র ৬ ওভারেই তারা করে ফেলে ৭৩ রান। এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় ফরচুন বরিশাল। একের পর এক উইকেট নিয়ে কুমিল্লাকে চেপে ধরে তারা। যার ফলে ইনিংসের বাকি ১৪ ওভারে আসে মাত্র ৭৮ রান।
শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে সবমিলিয়ে কুমিল্লার ইনিংস থেমেছে ৯ উইকেটে ১৫১ রানে। বিপিএলের অষ্টম আসরে চ্যাম্পিয়ন হতে বরিশালের সামনে লক্ষ্য এখন ১৫২ রানের।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুমিল্লা। তাদেরকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়ার দায়িত্বটা বেশ ভালোভাবেই পালন করেছেন নারিন। পাওয়ার প্লে'র পূর্ণ সুবিধা নিয়ে মাত্র ২১ বলে ফিফটি করেছেন তিনি।
পুরো আসরে ওভারপ্রতি ছয়েরও কম রান খরচ করেছিলেন ফরচুন বরিশালের আফগান রহস্য স্পিনার মুজিব উর রহমান। কিন্তু আজকের ম্যাচে তাকে তুলোধুনোই করলেন নারিন। মুজিবের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুই ছক্কা ও এক চারের মারে ১৮ রান তুলে নেন এ বাঁহাতি ব্যাটার।
এরপর শফিকুল ইসলামের পরের ওভারেও হাঁকান দুই ছক্কা ও এক চার। পরের দুই ওভারে তেমন রান আসেনি। তবে সাকিব আল হাসানের করা পঞ্চম ওভারে তিনটি বাউন্ডারির পর শেষ বলে তিন রান নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি হাঁকান নারিন। আজকের ফিফটি করতে তিনি খেলেন ২১ বল।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে নারিনের বিদায়ঘণ্টা বাজান মেহেদি হাসান রানা। সেই ওভারেও প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান নারিন। পরের বলে আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। আউট হওয়ার আগে ৫টি করে চার-ছয়ের মারে ২৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন নারিন।
এই নারিন শোয়ের মাঝেই মাত্র ৪ রান করে আউট হন আরেক ওপেনার লিটন দাস। সাকিবের প্রথম ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আর্ম ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান ৬ বলে ৪ রান করা এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। আর নারিনের বিদায়ের পর কুমিল্লাকে পুরোপুরি চেপে ধরে বরিশালের বোলাররা।
পাওয়ার প্লে'র ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৭৩ রান করে ফেলেছিল কুমিল্লা। কিন্তু পরের ৬ ওভারে আসে মাত্র ২৭ রান, সাজঘরে ফিরে যান চার ব্যাটার। সপ্তম ওভারে ফাফ ডু প্লেসির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন ৭ বলে ৮ রান করা মাহমুদুল হাসান জয়। এক ওভার পর মুজিবকে ফিরতি ক্যাচ দেন ৭ বলে ৪ রান করা ডু প্লেসি।
পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন ইমরুল কায়েসও। ডোয়াইন ব্রাভোর শর্ট পিচ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে গতি ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি ইমরুল। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।কুমিল্লার অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান।
মাত্র ১০ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। তাদের বিপদ আরও বাড়ে ১১তম ওভারে আরিফুল হকও সাজঘরের পথ ধরলে। মুজিবের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে সোজা বোল্ড হওয়ার আগে রানের খাতা খুলতে পারেননি আরিফুল। মাত্র ৫ ওভারের মধ্যে ঝড়ো সূচনা থেকে আকস্মিক বিপর্যয় দেখে ফেলে কুমিল্লা।
এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে দলকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন ইংলিশ অলরাউন্ডার মইন আলি ও আবু হায়দার রনি। এ দুজনের ৮.৪ ওভারের জুটিতে আসে ৫৪ রান। শফিকুলের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ৩৮ রান করেন মইন।
একই ওভারের তৃতীয় বলে শফিকুলের বাউন্সারে সাজঘরে ফেরেন আবু হায়দার রনি। এ ডানহাতি ব্যাটার ২৭ বল খেলে করেন ১৯ রান। পরের বলেই আপার কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন শহিদুল ইসলাম। ইনিংসের শেষ দুই বলে আসে আর মাত্র ১ রান, তাও বাই থেকে। কুমিল্লার ইনিংস থামে ১৫১ রানে।
সবমিলিয়ে ইনিংসের শেষ ওভারে মাত্র ১ রান খরচ করে দুই উইকেট নেন শফিকুল। নিজের ৪ ওভারে ৩১ রান খরচ করেন শফিকুল। এছাড়া মুজিব ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় ২ উইকেট নেন। সাকিব, ব্রাভো ও মেহেদি রানার শিকার ১টি করে উইকেট।