শিরোনাম
আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের ফাইনালে দুই লিভারপুল তারকার দেখা হবে? সম্ভাবনাটা এখনো বেঁচে আছে। গতকাল যে সেমিফাইনালে উঠে গেছে লিভারপুলের দুই ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহর মিশর ও সাদিও মানের সেনেগাল।
পিছিয়ে পড়েও সালাহর দ্যুতিতে মরক্কোকে অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে ২-১ গোলে হারিয়েছে মিশর, সেনেগাল ৩-১ গোলে জিতেছে টুর্নামেন্টের ‘জায়ান্ট কিলার’ ইকুয়েটরিয়াল গিনির বিপক্ষে।
আগামী বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে মিশর খেলবে স্বাগতিক ক্যামেরুনের বিপক্ষে, পরের দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সেনেগালের প্রতিপক্ষ বুরকিনা ফাসো। ফাইনাল আগামী রোববার।
সালাহ ও মানের দলের জন্য কাল চ্যালেঞ্জটা ছিল দুই রকমের। সালাহর মিশরের সামনে ছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল মরক্কো, পিএসজির রাইটব্যাক আশরাফ হাকিমির নৈপুন্যে যারা আগের দুই ম্যাচে জিতেছিল।
অন্যদিকে আগের ম্যাচে মাথায় আঘাত পেয়ে উঠে যাওয়া মানে সেনেগালের হয়ে শুরু থেকে খেলতে পারবেন কি না, সেই শঙ্কা ছিল। বাড়তি ভয় হয়ে প্রতিপক্ষ বুরকিনা ফাসো তো ছিলই, টুর্নামেন্টে যারা এরই মধ্যে আগের বারের চ্যাম্পিয়ন আলজেরিয়াকে বিদায় করে দেওয়ার পর হারিয়েছে সিয়েরা লিওন আর মালিকেও।
মানে চোট কাটিয়ে পুরো ম্যাচই খেলেছেন, তবে আফ্রিকান নেশনস কাপে কাল মুগ্ধতা বেশি ছড়িয়েছেন সালাহই। ইয়াইন্দের আহমাদু আহিদজো স্টেডিয়ামে ৭ মিনিটে বক্সে হাকিমিকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় মরক্কো, সেখান থেকে সোফিয়ান বুফালের গোলে এগিয়ে যায় দলটা। কিন্তু এরপর ম্যাচে দাপট নিয়ে ফিরে আসে মিশর। দাপুটে ছন্দে দেখা দেন সালাহ।
৫৩ মিনিটে লিভারপুলের ফরোয়ার্ডের গোলেই সমতায় ফেরে মিশর। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষেও ১-১ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে এবার সালাহ দেখা দিলেন গোলে সহায়তাকারীর ভূমিকায়। ঠিক ১০০তম মিনিটে তাঁর পাস থেকে গোল করে মিশরকে এগিয়ে দেন মাহমুদ ত্রেজেগে। এ বেলায় আর মরক্কোর ত্রাতা হয়ে দেখা দিতে পারলেন না হাকিমি।
২০০৪ সালের পর কখনো আফ্রিকান নেশনস কাপের সেমিফাইনালে উঠতে না পারার ব্যর্থতা এবারও ঘোচাতে না পারার কষ্ট নিয়ে বিদায় হচ্ছে হাকিমিদের। আর টুর্নামেন্টের সফলতম দল মিশর সেমিফাইনালে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অষ্টম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বুকে নিয়ে।
তবে সালাহ আপাতত অতদূর ভাবছেন না। কাল জয় পেয়েছেন, আপাতত সেটিতেই সন্তুষ্ট লিভারপুলের মিশরীয় ফরোয়ার্ড, ‘কঠিন একটা দলের বিপক্ষে দারুণ খেললাম আমরা, ওরা আমাদের তেমন জায়গাই দেয়নি। তবে আমরা ভালো খেলেছি, জিতেছি। আপাতত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এটাই।’
একই স্টেডিয়ামে পরের ম্যাচে সেনেগালের জয়ের ব্যবধানটা বড় হলেও সেটিও একেবারে সহজে আসেনি। র্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে আফ্রিকায় সবার ওপরে থাকা সেনেগাল ২৮ মিনিটে এগিয়ে যায় ফামারা দিয়েদিয়ুর গোলে, রক্ষণভেদী দারুণ পাসে গোলটি গড়ে দিয়েছেন মানে।
কিন্তু র্যাঙ্কিংয়ে ৯৪ ধাপ পেছনে থাকা ইকুয়েটরিয়াল গিনির বিপক্ষে ছড়ি ঘোরানো সেনেগাল এরপর আরও গোল পাবে মনে হলেও বিরতিতে ব্যবধান থাকল ১-০-ই।
উল্টো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেশ স্নায়ুচাপে পড়ে গেলেন মানেরা। বিরতির পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সেনেগালের বিরুদ্ধে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। অভিযোগ, নিজেদের বক্সে বল লেগেছিল সেনেগালিজ ডিফেন্ডার কালিদু কুলিবালির হাতে। কিন্তু ভিএআরে দেখার পর সিদ্ধান্ত বদলান রেফারি।
বল কুলিবালির হাতে লেগেছে ঠিকই, কিন্তু সেটি ইচ্ছাকৃত ছিল না। শটের সময়ে বলের কাছেই থাকা কুলিবালির হাত সরিয়ে নেওয়ার সময় ছিল না, তাঁর হাতও শরীর থেকে দূরে ছিল না—তাই সিদ্ধান্ত বদল রেফারির।
কিন্তু পেনাল্টি না পাওয়ার হতাশা চেপে রেখে ইকুয়েটরিয়াল গিনি দ্বিতীয়ার্ধে শুরুর দাপটটা ধরে রাখে, ৫৭ মিনিটে গোলও পেয়ে যায়। বক্সের সামনে কয়েক পাসের পর ইয়ানিক বায়লা বল জড়িয়ে দেন সেনেগালের জালে। টুর্নামেন্টে পঞ্চম ম্যাচে এসে প্রথম গোল খেল সেনেগাল।
তবে গোল খেয়ে যেন হুঁশ ফেরে সেনেগালের। ১১ মিনিট পরই চিখু কাওয়াতের গোলে আবার এগিয়ে যায় সেনেগাল। তার ১১ মিনিট পর আবার গোল, এবার গোলদাতা ইসমাইলা সার।