সেঞ্চুরিয়ান কনওয়েকে এবার অল্পেই থামালেন এবাদত-সাদমান

ফানাম নিউজ
  ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫২

প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রানের জবাবে করেছে ৪৫৮ রান। তবে দলের চার ব্যাটার ৬০-র ঘর পেরোলেও কেউই সেঞ্চুরি করতে পারেননি। যা করেছিলেন স্বাগতিকদের তিন নম্বরে নামা ডেভন কনওয়ে। তিনি খেলেছিলেন ১২২ রানের ইনিংস।

তবে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে আর কনওয়েকে বেশি দূর যেতে দেননি এবাদত হোসেন ও সাদমান ইসলাম। ব্যক্তিগত ১৩ রান করে এবাদতের বলে সাদমানের হাতে ক্যাচে পরিণত হয়েছেন কনওয়ে। এবাদত আবেদন করছিলেন লেগ বিফোরের। তবে সাদমানের উপস্থিত বুদ্ধিমত্তায় ক্যাচ আউট পেয়েছে বাংলাদেশ।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৬ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬৪ রান। তারা এখনও পিছিয়ে ৬৬ রানে। টম লাথাম ১৪ ও কনওয়ে আউট হয়েছে ১৩ রান করে। ডানহাতি ওপেনার উইল ইয়ং খেলছেন ৩১ রানে। তাকে সঙ্গে দিতে এসেছেন অভিজ্ঞ রস টেলর।

১৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিল নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ৮ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ করে ফেলে ২৫ রান। তবে নবম ওভারেই ১৪ রান করা লাথামকে বোল্ড করে দেন তাসকিন আহমেদ। আউট হওয়ার আগে কিউই অধিনায়ক করেন ১৪ রান।

এরপর আক্রমণে এসে দারুণ বোলিং করতে থাকেন এবাদত। ইয়ং-কনওয়ের বেশ ভালো পরীক্ষা নেন তিনি। দুইবার ইয়ংয়ের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল স্লিপ অঞ্চল দিয়ে সীমানায় চলে যায়। একবার তার থাই প্যাডে লেগে বল জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। সেটিতে রিভিউ নিয়ে হতাশ হয় বাংলাদেশ।

তবে ইনিংসের ২৫তম ওভারে আর হতাশ হতে হয়নি। এবাদতের করা সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে কনওয়ের বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের জোরালো আবেদন করে বাংলাদেশ। তবে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লে'তে দেখা যায় বল প্যাডে আঘাত হানার আগে লেগেছে ব্যাটের ভেতরের কানায়।

কিন্তু প্যাডে আঘাত হানার পর গালি অঞ্চলের দিকে উড়ে যাওয়া বল সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে তালুবন্দী করেন সাদমান। ফলে লেগ বিফোর না হলেও, ক্যাচ আউট পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে দলীয় ৬৩ রানে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। কনওয়ের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান।

এক ওভার পর আরেক ওপেনার উইল ইয়ংকে বোকা বানিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগা বলটি গ্লাভসে নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন। ফলে ৩১ রানে জীবন পেয়ে যান প্রথম ইনিংসে ৫২ রানের ইনিংস খেলা কনওয়ে।

এর আগে বাংলাদেশের আশা ছিল দেড়শ রানের লিড নেওয়ার। অল্পের জন্য তা হয়নি। তবে বছরের প্রথম টেস্টে রেকর্ড গড়ে বড় লিডই পেয়েছে বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১৩০ রান বেশি করে থেমেছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওভার ব্যাটিংয়ের রেকর্ড গড়েছে মুমিনুল হকের দল।

আগের দিন ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। আজ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও ৫৭ রান। মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৭ ও ইয়াসির আলি রাব্বি ২৬ রান করলে ৪৫৮ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। বিদেশের মাটিতে এই প্রথম বাংলাদেশের প্রথম আট ব্যাটার ৫০+ বল খেলার রেকর্ড গড়লো।

মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যেতে পারতেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সাত বলের ব্যবধানে দুইবার রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান তিনি। প্রথমে রাচিন রবীন্দ্র ও কাইল জেমিসনের ওভারে লেগ বিফোর আউট দেওয়া হয় মিরাজকে। দুইবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মিরাজ।

শুরুতেই দুইবার বেঁচে যাওয়ার পর ইয়াসির ও মিরাজ দেখেশুনে পার করে দেন দিনের প্রথম ঘণ্টা। উইকেটের খোঁজে থাকা নিউজিল্যান্ড ১৬০ ওভার হতেই নিয়ে নেয় তৃতীয় নতুন বল। তাতেও মেলেনি সাফল্য। ইয়াসির-মিরাজ দৃষ্টিনন্দন কিছু শট খেলে বাংলাদেশের লিড ১০০ পার করে দেন।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে অতিরিক্ত সূর্যতাপের কারণে একপর্যায়ে সানগ্লাস নিয়ে ব্যাটিং করতে হয়েছে মিরাজকে। তবে সেটিও ঘেমে যাওয়ায় চার বলই ফেরত দিতে হয়েছে ড্রেসিংরুমে। সাবলীল ব্যাটে ফিফটির আশা জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে তা করতে দেননি টিম সাউদি।

মিরাজকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে লম্বা সময় পর সাফল্যের দেখা পান সাউদি। আউট হওয়ার আগে ৮ চারের মারে ৮৮ বলে ৪৭ রান করেন মিরাজ। তার বিদায়ে ভাঙে ৭৫ রানের সপ্তম উইকেট জুটি। এরপর আর ১৩ রান তুলতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ।

ইয়াসির রাব্বির ব্যাট থেকে আসে ৮৫ বলে ২৬ রান। নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ৪, নেইল ওয়াগনার ৩, টিম সাউদি ২ ও কাইল জেমিসন নেন ১টি উইকেট।

সূত্র: জাগো নিউজ