শিরোনাম
২০২১ সাল পার হয়ে গেছে। বছরের শুরুতে দারুণ জয় দিয়ে শুরু হলেও শেষের দিকে এসে বিশ্বকাপে ভরাডুবি এবং পাকিস্তানের কাছে টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে শোচনীয় পরাজয় পুরো বছরটাকেই যেন মাটি করে দিয়েছিল। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়কেও অনর্থক করে দিয়েছিল।
বলা যায়, ২০২১ সালের শেষ সময়টা বাংলাদেশ ক্রিকেট পার করেছে কঠিন একটি সময়। ভেতর এবং বাইরে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
কিন্তু ২০২২ সাল কেমন যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের? করোনার কারণে কোনো সমস্যা তৈরি না হলে ২০২২ সালে দারুণ চ্যালেঞ্জিং একটি বছর কাটাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
আইসিসি, এসিসি এবং বিসিবি- নানা আয়োজনে পুরো বছরটাকেই ব্যস্ত করে তুলবে ক্রিকেটারদের জন্য। এক কথায় নিঃশ্বাস ফেলারও সুযোগ মিলবে না ক্রিকেটারদের। আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া মিলিয়ে তুমুল চ্যালেঞ্জিং একটি বছর কাটাতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) বাইরে আরো অনেকগুলো দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এই বছর সব মিলিয়ে অন্তত ৬১টি ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
এফটিপি অনুযায়ী আগামী বছরে অন্তত ২১টি ওয়ানডে, ২৫টি টি-টোয়েন্টি ও ১১ টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এর বাইরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে কমপক্ষে চারটি ম্যাচ। এফটিপির বাইরেও রয়েছে একাধিক টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
এরই মধ্যে বলা যায় শুরু হয়ে গেছে। বছরের প্রথমদিন, ১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হয়েছে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। যা আবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। নিউজিল্যান্ড সফর শেষ করে আসার পরই ঘরোয়া আয়োজন বিপিএল। এক মাস ধরে চলবে এই টুর্নামেন্ট। এরপরই আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ।
আফগানিস্তানের মোকাবেলা শেষ হতে না হতেই বাংলাদেশ দলকে উড়াল দিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানেও টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ। দেশে ফিরে আসার পর টাইগাররা এপ্রিল-মে মাসেই মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। এখানে শুধু টেস্ট সিরিজ।
শ্রীলঙ্কাকে বিদায় জানানোর পরই আয়ারল্যান্ডের বিমানে উঠতে হবে বাংলাদেশ দলকে। সেখানে খেলতে হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। আয়ারল্যান্ড থেকে ফিরে আসার পর একটুও সময় মিলবে না টাইগারদের সামনে। চলে যেতে হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। ক্যারিবীয়দের সঙ্গে রয়েছেন দুই টেস্ট এবং তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে টাইগারদের চলে যেতে হবে জিম্বাবুয়েতে। আগস্টে সেখানে রয়েছে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে এবং তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। জিম্বাবুয়ে থেকে ফিরে আসার পর আগস্ট-সেপ্টেম্বর রয়েছে এশিয়া কাপ। যদি এই টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সেখানে অংশ নেবে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ভেন্যু এখনও পর্যন্ত নির্ধারণ করা আছে শ্রীলঙ্কা।
এশিয়া কাপ হোক না হোক, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে আয়ারল্যান্ডের। এই সফরে টাইগারদের সঙ্গে ১ টেস্ট, তিন ওয়ানডে এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে আইরিশরা। অক্টোবর-নভেম্বরে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এরপর নভেম্বর-ডিসেম্বরে বছরের শেষ সিরিজ। ভারত আসবে বাংলাদেশে। খেলবে দুটি টেস্ট এবং ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
মার্চ-এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডে রয়েছে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে বিশ্বকাপে প্রথমবারেরমত খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। বছরের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। এখানে কেমন করে যুবারা, সেটা দেখার বিষয়। শিরোপা ধরে রাখতে পারবে কী তারা?
বছরজুড়ে এমন ব্যস্ত সূচি কতটা বাস্তবায়ন হবে সেটাই এখন প্রশ্ন। কারণ, টানা খেলতে খেলতে টাইগাররা শেষ পর্যন্ত কতটা টিকে থাকতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। নাকি এখান থেকে কাটছাঁট হতে পারে কোনো নির্ধারিত সূচি? দেখা যাক কী হয় শেষ পর্যন্ত।