শিরোনাম
দীর্ঘ ২১ বছর পর বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) পাড়ি জমিয়েছেন লিওনেল মেসি। তিনি নতুন ক্লাবে মানিয়ে নিতে পারবেন কি না, এ প্রশ্ন ছিলো অনেকেরই। পিএসজির হয়ে তৃতীয় ম্যাচের পরই সে প্রশ্ন আরও বড় হয়ে দেখা দিলো। কেননা তৃতীয় ম্যাচেই কোচের ওপর নাখোশ দেখা গেছে মেসিকে।
নেইমার জুনিয়র, কাইলিয়ান এমবাপে ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার সঙ্গে লিওনেল মেসিকে রেখে আক্রমণাত্মক দল সাজিয়েছিলেন মাউরিসিও পচেত্তিনো। কিন্তু ম্যাচের পুরোটা সময় খেলাননি মেসিকে, তুলে নেন ৭৬ মিনিটের সময়। আর এ সিদ্ধান্তটিই মনঃপুত হয়নি মেসির। যা স্পষ্টই বোঝা গেছে তার অভিব্যক্তিতে।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু নতুন ক্লাব পিএসজির হয়ে খেলা তিন ম্যাচে গোলের খাতা খুলতে পারেননি বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তবে এমন নয় যে, পিএসজির হয়ে জাদুকরী পারফরম্যান্সের ঝলক দেখাতে পারছেন না তিনি।
রোববার রাতে অলিম্পিক লিওনের বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচে স্বপ্রতিভ ছিলেন মেসি। পুরো ম্যাচের সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরি করেছেন, লক্ষ্য বরাবর সবচেয়ে বেশি শটও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত গোলের দেখাই পাননি। মেসি ও গোলের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বার পোস্ট।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ডি-বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হন নেইমার, ফ্রি কিক পায় পিএসজি। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া ফ্রি কিকে মানব দেয়ালকে পরাস্ত করার পাশাপাশি গোলরক্ষক লোপেজকেও হার মানান মেসি। কিন্তু সেই শট প্রতিহত হয় ক্রসবার ও পোস্টের সংযোগস্থলে। ফলে হাতছাড়া হয় সুবর্ণ সুযোগ।
প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ তৈরি করেছিলেন মেসি। বিশেষ করে ম্যাচের ৩২ মিনিটের সময় নেইমারের ব্যাক হিল থেকে বল পেয়ে দূরের পোস্টে শট নেন তিনি। আগেই ঝাঁপ দেয়া লোপেজ শেষ মুহূর্তে পায়ের আলতো টোকায় কর্নান কিকের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন সেই শট। এর আগে ম্যাচের শুরুর দিকে মেসির শট ব্লক করেন ডিফেন্ডার ডেনায়ার।
পরে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের দলকে এগিয়ে দেয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। ম্যাচের ৭৪ মিনিটের সময় নেইমারের সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান করে এগিয়ে গিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তিনি। পরের মিনিটেই তাকে উঠিয়ে নেন পিএসজি কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো। তার জায়গায় নামান আশরাফ হাকিমিকে।
কোচের এমন আচমকা সিদ্ধান্তের জন্য যেনো প্রস্তুত ছিলেন না মেসি। মাঠ ছাড়ার সময় হাকিমির সঙ্গে হাত মেলান ঠিকই, কিন্তু পচেত্তিনো হাত এগিয়ে দিলেও হাত মেলাননি মেসি। উল্টো কোচের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকান, যেনো জানতে চাইছিলেন কী কারণে তাকে ১৫ মিনিট আগেই মাঠ থেকে তুলে নেয়া হলো।
মেসির সেই মুহূর্তের ছবি-ভিডিও নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। তাই ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখা হয় পচেত্তিনোর কাছে। তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে, খানিক ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। তার মতামত হলো, মাঠের যেকোনো বিষয়ে ভালো-মন্দ সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে কোচের। সেটিই তিনি করেছেন।
পচেত্তিনোর ভাষ্য, ‘সবাই জানে, আমাদের দলে সব দুর্দান্ত খেলোয়াড়রা আছেন। আমাদের স্কোয়াডে ৩৫ জন অসাধারণ খেলোয়াড় রয়েছে। সেখান থেকে আমাদের ঠিক করতে হয় কোন ১১ জন ম্যাচ শুরু করবে। এরপর ম্যাচ চলাকালীন সময়েও সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘কখনও কখনও সিদ্ধান্তগুলো কাজে লাগে, কখনও কখনও কাজে লাগে না। কিন্তু এ কাজগুলো করার জন্যই আমরা বেঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি এবং ভাবি যে কী করা উচিত। এসব সিদ্ধান্ত আপনাকে নিতেই হব, সেটায় ফল ভালো আসুক বা না আসুক; পছন্দ হোক বা না হোক।’