শিরোনাম
ম্যাচ শুরুর আগে দুপুরের ঘটনা। বাংলাদেশ দলের বাস যখন স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছিল, তখন বেশ নীরব শেরে বাংলার বাইরের জায়গা, তেমন সাড়া নেই দর্শকদের মাঝে। ঠিক কাছাকাছি সময়েই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে পাকিস্তানের টিম বাস। তখন বাইরে উপস্থিত মানুষদের চিৎকার ও হর্ষধ্বনিতে ভিমড়ি খাওয়ার জোগাড়, এই সিরিজে স্বাগতিক দেশ আসলে কারা?
এখানেই শেষ নয়। ম্যাচের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন দলের সহ-অধিনায়ক শাদাব খান। সেই ছয়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারির একটা বড় অংশের চিৎকারে কেঁপে ওঠে শেরে বাংলা। বোঝাই দায়, আসলে জয় পেয়েছে কারা?
শুরুর আগে টিম বাসের ঐ ঘটনা কিংবা ম্যাচের শেষ বলে গ্যালারির দৃশ্য- শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঝের সময়টায়ও দেখা গেছে শেরে বাংলার গ্যালারিতে উড়ছে প্রতিপক্ষ দেশের পতাকা। সেখানে অবশ্যই কিছু দর্শক ছিলেন, যারা পাকিস্তান থেকে পড়াশোনার জন্য এসেছেন বাংলাদেশে।
এর বাইরে অনেক বাংলাদেশি নাগরিকও পাকিস্তানের পতাকা ও জার্সি গায়ে চাপিয়ে পুরো ম্যাচে সমর্থন দিয়েছেন বাবর আজমের দলকে। ম্যাচ শেষে এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরায় তেমনই কয়েকজন মানুষ গর্বের সঙ্গেই স্লোগান দিয়েছেন, পাকিস্তান জিন্দাবাদ।
নিজ দেশের মাটিতে বাংলাদেশের মানুষদের হাতেই পাকিস্তানের পতাকা দেখে মর্মাহত জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সম্প্রতি বাংলাদেশ দল খারাপ করছে বিধায় নিজ দেশ বাদ দিয়ে অন্যকে সমর্থন দেওয়া মানতে পারছেন না তিনি।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে মাশরাফি লিখেছেন, ‘খেলার সঙ্গে কোনো কিছু মেলানো যায় না এটা ঠিক। কিন্তু খেলাটা যখন আমাদের দেশে আর খেলছে আমাদের দেশ, সেখানে অন্য যে দেশই খেলুক না কেন, তাদের পতাকা তাদের দেশের মানুষ ছাড়া আমাদের দেশের মানুষ উড়াবে, এটা দেখে সত্যি কষ্ট লাগে।’
সবাইকে বাংলাদেশ চিৎকারে গ্যালারি মাতানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, ‘যে যাই বলুক, ভাই দেশটা কিন্তু আপনার। আজ হয়নি তো কাল হবে, না হলে পরশু হবে। আপনারা পাশে না থাকলে আর হবেই না। হারি বা জিতি স্টেডিয়ামে আমাদের দেশের পতাকা উড়ুক, চিৎকার হোক বাংলাদেশ।’