শিরোনাম
বাংলায় খুব প্রচলিত একটা প্রবাদ আছে, ‘বাঁ হাতের খেল’; মানে যে কাজ খুব সহজে করা যায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালকে যেন আক্ষরিক অর্থেই বাঁ হাতের খেল বানিয়ে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া।
অজি বাঁহাতি ব্যাটাররা যেন পাকিস্তানি বোলারদের কাছে হয়ে উঠছেন দুঃস্বপ্নের আরেক নাম। পুরোনো ইতিহাস ফিরে এসেছে নতুন মোড়কে। ২০১০ সেমিফাইনালে মাইক হাসি বিধ্বস্ত করেছিলেন সাঈদ আজমলকে। প্রায় এক যুগ পর ২০২১ সালে ম্যাথু ওয়েডের কাছে ধরাশায়ী হলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
পাকিস্তান: ১৯১/৬(২০), অস্ট্রেলিয়া: ১৯৭/৭(১৯.৫)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী
ভেন্যু: গ্রস আইলেট, সেন্ট লুসিয়া (১৪ মে ২০১০)
প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে শেষ পাঁচ বলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১৭ রান। পাকিস্তানের পক্ষে শেষ ওভারে বোলিং করছিলেন সাঈদ আজমল। ওভারের দ্বিতীয় বলটি পুল করে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা হাঁকান মাইক হাসি।
এই ছক্কায় হাসি যেন ‘এমএলএ ফাটাকেস্ট’র সুরে সুর মিলিয়ে আজমলকে জানান দিয়েছিলেন এই বলে, ‘এবার বাকি সিনটা বসে বসে দেখ।’ আজমলের পরের বলটি আবারও উড়িয়ে সীমানাছাড়া করেন হাসি, এবারের গন্তব্য লং অন।
চতুর্থ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ওপর দিয়ে চার মেরে স্কোর সমান করেন হাসি। পরের বলে ফের আজমলকে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান হাসি, উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো অসি। একইসঙ্গে বিলীন হয়ে যায় পাকিস্তানের ‘হাসি’ও।
পাকিস্তান: ১৭৬/৪(২০), অস্ট্রেলিয়া: ১৭৭/৫(১৯)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী
ভেন্যু: দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১১ নভেম্বর ২০২১)
সেন্ট লুসিয়া থেকে দুবাই- ১১ বছর ব্যবধানে চিত্রনাট্যটা একই। তবে এবারের চরিত্রগুলো ভিন্ন। দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে অস্ট্রেলিয়ার সমীকরণ গিয়ে দাঁড়ায় ১০ বলে ২০ রানে। স্ট্রাইকে ম্যাথু ওয়েড আর বল হাতে শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এমন অবস্থায় শাহিন আফ্রিদিকে তুলে মেরেছিলেন ওয়েড। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে হাসান আলি হাতছাড়া করেন সহজ একটি সুযোগ। এরপরই যেন শাহিনকে ‘টাইম মেশিনে’ চড়িয়ে সেন্ট লুসিয়ায় নিয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
ওভারের চতুর্থ বলে শাহিনের প্রতি ঘণ্টা ১৪৫ কিলোমিটার গতির ইয়র্কারকে স্কুপ করে ফাইন লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান ওয়েড। পরের বলে পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসারের স্লটে ফেলা ডেলিভারিকে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে সীমানার ওপারে মারতে একদমই বেগ পেতে হয়নি উড়তে থাকা ওয়েডের।
আর ১৯ তম ওভারের শেষ বলে ফের স্কুপের আশ্রয় নেন সাত নম্বরে নামা অসি উইকেটরক্ষক। এবার শাহিনকে ঠিক মোহাম্মদ রিজওয়ানের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে এক ওভার আগেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন ওয়েড।