শিরোনাম
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলতে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে যাওয়া টাইগারদের জন্য এই গুরুত্বহীন ম্যাচ আবার গুরুত্বপূর্ণও বটে! অজিদের বিপক্ষে জিতলে একে তো মুখ রক্ষা হবে, অন্যদিকে আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের।
সেমিফাইনাল স্বপ্ন দেখিয়ে বিশ্বমঞ্চে পা রাখলেও, বাংলাদেশের ভেতরের কঙ্কাল বেরিয়ে এসেছিল প্রথম পর্বেই। ঘরের মাঠে স্লো অ্যান্ড স্পিনিং ট্র্যাকে খেলতে খেলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় ওমানের উইকেটে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেই গলদঘর্ম টাইগাররা। হেরে বসে প্রথম ম্যাচ। এরপর ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনিকে হারানো গেলেও, সুপার টুয়েলভে হার সবকটি ম্যাচে।
সেমি-স্বপ্ন যে বড্ড বাড়াবাড়ি ছিল, সুপার টুয়েলভের প্রথম চার ম্যাচে বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরম্যান্স তা প্রমাণ করেছে। তবে মান রক্ষা বলে তো একটা কথা আছে। আছে সান্ত্বনা বলে কিছু পাওয়া। বাংলাদেশ আজ সেই লক্ষ্যেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে।
মানরক্ষার এই ম্যাচে বাংলাদেশের মন থাকবে র্যাংকিংয়েও। আইসিসির সবশেষ হালনাগালকৃত র্যাংকিংয়ে টাইগারদের অবস্থান ৯-এ। এ ম্যাচ জিতলে র্যাংকিংয়ের সাতে চলে আসবে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা। আর হেরে গেলে থাকবে নবম স্থানেই।
তবে পরের বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলার শর্ত হলো, ফাইনালে খেলা দুই দল ছাড়া ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত র্যাংকিংয়ের সেরা ছয়ে থাকতেই হবে। ধরে নেয়া যায়, এবারের বিশ্বকাপ জিতবে র্যাংকিংয়ে সেরা ৮-এ থাকা কোনো দল। সেক্ষেত্রে অন্তত ৮-এ থেকে এবারের বিশ্বকাপ শেষ করলেই চলবে বাংলাদেশের।
অবশ্য হেরে গেলেও একটা সম্ভাবনা থাকবে। সেক্ষেত্রে চলতি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হবে। তাহলেই আটে থেকে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে সরাসরি খেলতে পারবে বাংলাদেশ।
যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর হারে কি-না এবং ভিন্ন এক অস্ট্রেলিয়ার সামনে বাংলাদেশ নিজেদের সমীকরণ মেলাতে পারে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। গত আগস্টে এই অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশকে ঘরে ডেকে এনে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করেছিল। স্লো অ্যান্ড টার্নিং ট্র্যাক বানিয়ে কন্ডিশনের পূর্ণ ফায়দা লুটে অজিদের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারায় ৪-১ ব্যবধানে।
তবে সেই অস্ট্রেলিয়া আর বিশ্বকাপে আসা অস্ট্রেলিয়া দলের পার্থক্য অনেক। দলে ফিরেছেন অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল থেকে শুরু করে সব বড় তারকারা। আর বাংলাদেশের তো এখানে কন্ডিশনের ফায়দা লোটার কোনো সুযোগও নেই। মুখোমুখি দেখায় অস্ট্রেলিয়ার ৫ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের তাই খুব পিছিয়ে (৪ জয়) না থাকলেও, আজ ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে ফিঞ্চবাহিনী।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দুবাইয়ের উইকেট কমবেশি কথা বলছে স্পিনারদের পক্ষে। আজও তার ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ তাই শেখ মেহেদি এবং নাসুম আহমেদ-দুই স্পিনারকেই হয়তো খেলাবে। এদিকে, নুরুল হাসান সোহানের তলপেটের ব্যথা না কমায় একাদশে ফেরা হচ্ছে না তার। ফলে আজকের ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামার কথা বাংলাদেশের।
অস্ট্রেলিয়ারও একাদশে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা কম। আগে ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়া পেস বোলিং অলরাউন্ডার মিচেল মার্শের একাদশে ফেরার কথা থাকলেও, দুবাইয়ের স্পিনিং উইকেট দেখে হয়তো সিদ্ধান্ত বদলেছে অস্ট্রেলিয়ান টিম ম্যানেজমেন্ট। জানা গেছে, বাড়তি স্পিনার হিসেবে অ্যাস্টন অ্যাগারই থাকবেন একাদশে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: লিটন দাস, নাইম শেখ, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারী, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম।
অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড, প্যাট কামিন্স, অ্যাস্টন অ্যাগার, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড, অ্যাডাম জাম্পা।
সূত্র: জাগো নিউজ