শিরোনাম
দেশের ফুটবলে মাঠের খেলার জমজমাট অবস্থায় যতই ভাটা পড়ুক, বাফুফের নির্বাহী কমিটির ভোটের লড়াইটা ঠিকই কাঁপিয়ে দেয় ক্রীড়াঙ্গন। বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১৩৯ কাউন্সিলর ভোটাধিকারের মাধ্যমে সভাপতিসহ ২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি নির্বাচিত করে। আগামীতে কমিটির কাউন্সিলর সংখ্যা কমবে।
কমিটিতে পদ বেশি থাকায় বেশি মানুষ নির্বাহী কমিটিতে জায়গা দেয়া সম্ভব। পদ কমলে নির্বাহী কমিটিতে ঢোকার জন্য কামড়াকামড়িও বাড়বে। তাতে ভোটের লড়াই আরও জমবে। নির্বাচনটাও কঠিন হবে।
হঠাৎ কমিটি ছোট করার প্রশ্ন কেন? এটা বাফুফে স্বেচ্ছায় করছে না। ফিফাই নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাহী কমিটি ছোট করতে। ফিফা বলেছে বাংলাদেশের ফুটবল চালাতে এত মাথাভারী নির্বাহী কমিটির প্রয়োজন কী?
এখন পেশাদার লোকজনকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা। অ্যামেচার লোক দিয়ে আর চলে না। পেশাদার একটা কাঠামো দিয়েই ফুটবল পরিচালিত হোক- সেজন্যই নির্বাহী কমিটির পরিধি ছোট করতে বলেছে ফিফা।
কয় সদস্যের নির্বাহী কমিটি হবে? ফিফা সংখ্যাটা নির্ধারণ করে দেয়নি। তবে বিশ্ব ফুটবলের অভিভাক সংস্থা বলেছে সর্বোচ্চ ১১ সদস্যের কমিটি করতে। বাফুফে অবশ্য এ নিয়ে ফিফার সঙ্গে দেনদরবার করবে সংখ্যা বাড়াতে।
বাফুফের ভোটার ১৩৯ জন। এর বাইরে আছে কিছু নন-ভোটার কাউন্সিলর। ফিফার প্রশ্ন এতো কাউন্সিলর কেন? সর্বোচ্চ ১০০ কাউন্সিলর থাকতে পারে- এমন একটি নির্দেশনা দিয়েছে ফিফা।
জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফএ) নয়, ভোটার হবে বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফএ)। জেলা নির্বাচন করে দেবে বিভাগীয় প্রতিনিধি। শিক্ষা বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ফিফা।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের স্ট্যান্ডিং কমিটি ২২টি। ফিফার কাছে মনে হয়েছে খুবই অতিরিক্ত। সর্বোচ্চ ৮-১০ টা কমিটিই যথেষ্ট বাংলাদেশের ফুটবল পরিচালনার জন্য।
ফিন্যান্স কমিটি, প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি, অডিট অ্যান্ড কমপ্লায়ান্স কমিটি, আপীল কমিটি, ইলেকট্রল কমিটি, রেফারিজ কমিটি, কম্পিটিশন কমিটি, উইমেন্স কমিটি, ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড এথিক্স কমিটি ও অ্যামেচার ফুটবল কমিটির বাইরে আর স্ট্যান্ডিং কমিটি থাকার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন আছে ফিফার।
বাফুফে কি ফিফার চাওয়া অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ সদস্যের নির্বাহী কমিটি ও সর্বোচ্চ ১০০ কাউন্সিলর রেখে গঠনতন্ত্র সংশোধন করবে? বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতি চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেবেন গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ করতে।
কমিটি একটি খসড়া গঠনতন্ত্র তৈরি করবে। তা নিয়ে ফিফার সঙ্গে আলোচনা করবে বাফুফে। ফিফার সবুজ সঙ্কেত পেলেই গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করবে বাফুফের সাধারণ সভা। বৃহস্পতিবারের নির্বাহী কমিটির সভা এজিএম এর সম্ভাব্য তারিখও ঠিক করেছে ৩০ অক্টোবর।
বাফুফের নির্বাচন এলে কিছু মানুষের যেন শুরু হয় ঈদ-উৎসব। ফুটবলে কোন অবদান নেই- এমন মানুষও হয়ে যান অতি মূল্যবান ভোটার। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা এক জোট হয়ে নির্বাচনে প্রভাব খাটান।
ফিফা যদি তাদের নির্দেশনায় কঠোর থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে জেলার সংগঠকদের আর কাউন্সিলর হিসেবে দেখা যাবে না। বাফুফে ফিফার নির্দেশ শতভাগ মানতে বাধ্য হলে নির্বাহী কমিটির কাঠামোটা হতে পারে এমন- সভাপতি, তিন সহ-সভাপতি ও ৭ সদস্য।