কুলদীপ তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড পাকিস্তান

ফানাম নিউজ
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১৯

বৃষ্টির রাজত্বের দিনে ভারত-পাকিস্তানের হাইভোল্টেজ ম্যাচ গত রবিবার পণ্ড হলে খেলা গড়ায় রিজার্ভ ডে’তে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচটি সোমবার শুরু হয় ২৪.১ ওভার থেকে। আগের দিন ভারতের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান, বিরাট কোহলি ৮ ও লোকেশ রাহুল ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। এ দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের উপর ভর করেই সোমবার পুরো ব্যাটিং ইনিংস শেষ করে ভারত। রোহিত শর্মার দলের সংগ্রহ দাড়ায় ৩৫৬ রানে, যেখানে ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন কোহলি এবং ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন রাহুল। জয়ের জন্য ৩৫৭ রানের লক্ষ্যে লড়ছিল পাকিস্তান। এর মধ্যে ফের হানা দেয় বৃষ্টি। আবহাওয়াজনিত কারণে ম্যাচ সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত পাকিস্তান ১১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রানের সংগ্রহ করে।

বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকলেও ওভার কমানো হয়নি। পাকিস্তানের ব্যাটিং সেখানে থেমে ছিল সেখান থেকে আবার শুরু হয়। স্পিনার কুলদীপ যাদবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩২ ওভারে ১২৮ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ফলে ২২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। কুলদীপ যাদব ৮ ওভার বোলিং করে ২৫ রান দিয়ে তুলে নেন ৫ উইকেট। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার মোকাবিলা করবে ভারত।

রিজার্ভ ডে’র খেলায় সোমবার মাঠে নামেন আগের দিনে দুই অপরাজিত ব্যাটার বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। শুরুর দিকে কোহলি-রাহুল কিছুটা রক্ষণাত্মক খেললেও উইকেটে থিতু হয়ে চড়াও হয়ে উঠেন পাকিস্তানি বোলারদের উপর। দুই ব্যাটারই দ্রুত গতিতে ফিফটি পূরণ করে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত কাক্সিক্ষত শতরান পর্যন্তও পৌঁছে যান তারা। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে কোহলি-রাহুল জুটি ১৯৩ বলে ২৩৩ রান করে। তাদের এই দুর্দান্ত জুটির উপর ভর করে ৩৫৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ভারত। এর মধ্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি করেন রাহুল। তার পরপরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৭তম সেঞ্চুরি করেন কোহলি। তাছাড়া আজ ম্যাচে ভারতীয় তারকা কোহলি পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ১৩ হাজার রান পূরণ করেন। ক্যারিয়ারের এই দুর্দান্ত মাইলফলক স্পর্শ করার পথে আরেকটি রেকর্ড গড়েন তিনি। কোহলি সবচেয়ে দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে এই ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। এই মাইলফলক স্পর্শ করার পথে কোহলি ২৭৮টি ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।

এরপর ৩৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামেন পাকিস্তানি ওপেনার ফখর জাামন ও ইমাম উল হক। পঞ্চম ওভারেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। জাশপ্রিত বুমরাহ’র বলে শুভমান গিলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন ইমাম। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ৫০ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ৯ রান করেন। এরপর তিনে নামেন দলটির অধিনায়ক বাবর আজম। এরপর থেকে বাবর-ফখরের জুটিতে ভরসা রেখে জয়ের জন্য লড়াই করে পাকিস্তান। একাদশ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান বাবরও। এরপর চারে নামা মোহাম্মদ রিজওয়ান মাঠে আসেন। তিনি নামার পর কেবল ২ বলই খেলার সুযোগ পেয়েছেন। এরপরই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ করা হয়। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ফখর এবং রিজওয়ান অপরাজিত ছিলেন ১ রানে।

এর আগে গত রবিবার নির্ধারিত সময়ে টস হেরে ব্যাট হাতে নামে ভারত। দলটির হয়ে ইনিংস শুরু করেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। দুই ব্যাটারের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু পায় ভারত। রোহিত-শুভমান জুটি প্রথমে রক্ষণাত্মক খেলে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেন। এরপর থেকে শুরু হয় তাদের তান্ডব। দুই ব্যাটারই স্ট্রাইকে গিয়ে পাকিস্তানি বোলারদের বলে চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন। তাদের জুটি ভাঙ্গে শাদাব খানের করা ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে রোহিত আউট হলে। সাজঘরে ফেরার আগে ভারতীয় অধিনায়ক ৪৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসটি ছিল ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো। এরপর শুভমান গিলকে সঙ্গ দিতে তিনে ব্যাটিং করতে নামেন বিরাট কোহলি। তবে কোহলির সঙ্গে বড় জুটি গড়তে পারেননি শুভমান।

রোহিত বিদায় নেয়ার পরের ওভারেই শাহীন আফ্রিদির শিকারে পরিণত হন তিনি। প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে এই ওপেনার ৫২ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ১০টি বাউন্ডারি। পরবর্তীতে চারে নামেন কেএল রাহুল। তার সঙ্গে কোহলি জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত বিরাট কোহলি অপরাজিত ছিলেন ৮ রানে এবং কেএল রাহুল ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।