টাইগারদের হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো শ্রীলঙ্কা

ফানাম নিউজ
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:২৩

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদের তোপের মুখে লঙ্কানদের ইনিংস ২৫৭ রান পর্যন্ত পৌঁছায়। ২৫৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে ৪৮.১ ওভারে ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। সাকিব বাহিনীকে ২১ রানে হারিয়ে ফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।

জয়ের সহজ লক্ষ্যে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করেন নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই হয়। প্রথম ১১ ওভারে তারা ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙ্গে দাসুন শানাকার করা দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলে দুশান হেমান্থার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে মিরাজ বিদায় নিলে। তিনি রক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর শুরু হয় টাইগারদের উইকেট পতনের মিছিল। ১৪তম ওভারেই দলীয় ৬০ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান আরেক ওপেনার নাঈম। তিনি ৪৬ বলে মাত্র ২১ রানের ইনিংস খেলেন।

এরপর দলের হাল ধরতে পারতেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তিনে নামা লিটন দাস। তবে ১৬তম ওভারে সাকিব আউট হলে আর সাকিব-লিটনের জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা সাকিব গতকাল মাত্র ৩ রানের আউট হন। এর পরপরই তিনে নামা লিটন বিদায় নেন ১৫ রানে। এর মধ্যেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর দলের হালটা বরাবরের মতো শক্তহাতে ধরেন মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গে আরেকপ্রান্তে ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। দুই ব্যাটার রক্ষণাত্মক খেলে দলকে জয়ের পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন।

বিপত্তি ঘটে ৩৮তম ওভারে শানাকার বলে মুশফিক ২৯ রানে আউট হলে। এরপর শামীম পাটোয়ারী এসেও হৃদয়কে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। থিকশানার লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে তিনি মাত্র ৫ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন।

পরবর্তীতে নাসুম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইটা একাই চালাতে থাকেন হৃদয়। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে তিনি লক্ষ্যের দিকে ধীর গতিতে এগুতে থাকেন। এর আগে তিনি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূরণ করেন। শেষ পর্যন্ত থিকশানার লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনিও। ৯৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটার আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের জয়ের সকল সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও দ্বিমুথ করুনারত্নে। দুই ব্যাটার তাদের উদ্বোধনী জুটিতে ৩৪ রান করার পর আউট হন করুনারত্নে। এরপর স্বাগতিকদের হাল ধরেন নিশাঙ্কা ও কুশাল মেন্ডিস। ২৪তম ওভার পর্যন্ত টিকে ছিল এই জুটি। শরীফুল ইসলামের লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে নিশাঙ্কা আউট হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বাংলাদেশ। তবে এরপর মাঠে নামা সাদিরা সামারাউইকরামা উইকেটে সেট হওয়ার পর আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন। চারে নামা এই ব্যাটার ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত টিকে থেকে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন।

এর মধ্যে কুশাল মেন্ডিস ৫০ রানে, আসালাঙ্কা ১০ রানে, ধনাঞ্জয়া ৬ রানে, অধিনায়ক শানাকা ২৪ রানে ও থিকসানা ২ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন দুনিথ ওয়েল্লালাগে ও ১ রানে অপরাজিত ছিলেন রাজিথা। সকলের খেলা ইনিংসের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কা ২৫৭ রানের লড়াকু সংগ্রহ গড়ে।