শিরোনাম
শুরুতে ২-০, এরপর প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে গোল খাবো না, এ মানসিকতা নিয়েই হয়তো পুরোপুরি ডিফেন্সিভ হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কোচ মাইকেল আর্তেতা। তবে তার এই কৌশল যে পুরোপুরি ভুল ছিলো তা, প্রমাণ করে দিলো লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত অ্যানফিল্ডে ২-২ গোলে ড্র করে শিরোপাপ্রত্যাশী আর্সেনালের জয় কেড়ে নিলো অল রেডরা।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে এখনও পর্যন্ত অ্যানফিল্ড দ্বৈরথে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি আর্সেনাল। রোববারও ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল গানাররা। এ অবস্থায়ও শেষরক্ষা হল না তাদের। অনবদ্য ফুটবলে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে লিভারপুল শুধু নিজেদের মানই বাঁচাল না, সে সঙ্গে ম্যানেজার ইয়ুর্গেন ক্লপও যেন পায়ের নিচে খানিকটা শক্ত মাটি খুঁজে পেলেন।
আর্সেনালের সঙ্গে ড্র করার ফলে শিরোপা লড়াই জমিয়ে তুললো লিভারপুল। নিজেদের হয়তো খুব বেশি লাভ হয়নি অলরেডদের। তবে ক্ষতি হলো আর্সেনালের এবং বড় লাভ হলো ম্যানসিটির। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুই দলের মধ্যে ৫ পয়েন্টের ব্যবধান এখন তিন পয়েন্টে নেমে আসার সুযোগ সৃষ্টি হলো।
৩০ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে আর্সেনালই। ২৯ ম্যাচে ম্যানসিটির পয়েন্ট ৬৭। নিজেদের ৩০তম ম্যাচে সিটি যদি জয় পায়, তাহলে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান দাঁড়াবে ৩ পয়েন্টের। ২৯ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ৮ম স্থানে রয়েছে লিভারপুল।
দুই ব্রাজিলিয়ান তারকার গোলে শুরুতেই ২-০ ব্যবধানে অ্যানফিল্ডে এগিয়ে গিয়েছিলো আর্সেনাল। প্রথমে ম্যাচের আট মিনিটে গোল করেন গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেলি এবং ২৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস। এরপর কেউ কল্পনাও করতে পারেননি, এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচে ফিরে আসবে লিভারপুল।
কিন্তু ম্যাচের রং পাল্টাতে শুরু করে ৪২ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহ গোল করার পরে। যদিও পরে মিশরের তারকা একটি পেনাল্টি নষ্ট করেন। না হয় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতো লিভারপুল। ৮৭ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর গোলে জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে চলা আর্সেনালের।
ম্যাচের ফল নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না কোচ মাইকেল আর্তেতা। আর্সেনাল ম্যানেজার বলেছেন, ‘২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরে মনে হয়েছিল ম্যাচ আমাদের হাতে চলে এসেছে; কিন্তু পরের দিকে ম্যাচে ফুটবলাররা নিজেদের আধিপত্য সেভাবে বজায় রাখতে পারেনি। লিভারপুল দলকে অভিনন্দন, তারা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।’
সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এই ম্যাচ বড় শিক্ষা দিয়ে গেল। পরের ম্যাচে এমন ভুল শুধরে নিতে হবে আমাদের। তবে এমন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের পরে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়াও আমার কাছে যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে হয়েছে।’ আর্তেতা মেনে নিয়েছেন, একটা সময় লিভারপুলের ক্রমাগত আক্রমণ তাকেও প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছিল।
নিজের দলের ফুটবল দেখে সন্তুষ্ট লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। তিনি বলেন, ‘দুই গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পরে যে কোনও দলের পক্ষেই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে; কিন্তু আমরা দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম।’
সঙ্গে যোগ করেন, ‘সালাহ পেনাল্টি নষ্ট না করলে কী হতে পারত, সেটা নিয়ে নতুন করে আলোচনায় যেতে চাই না। তবে ম্যাচ জেতার মতোই ফুটবল খেলেছে দল। এক পয়েন্টে আমি হতাশ হচ্ছি না।’