শিরোনাম
আরো একটি টাইব্রেকার আরো একটি জয়। ক্রোয়েশিয়ার জন্য টাইব্রেকার ডাল-ভাত হয়ে গেছে। ২০১৮ বিশ্বকাপেও একাধিক টাইব্রেকার জিতে ফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া। এবারও এর ব্যতিক্রম হলো। এবার ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ বীরত্বে কোয়ার্টারে উঠলো বর্তমান বিশ্বকাপ রানার্সআপরা। পেনাল্টি শুট আউটে ৩টি পেনাল্টিই অসাধারণভাব রুখে দেন তিনি। টাইব্রেকারে জাপানকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে তারা চলে গেল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।
এশিয়ার অন্যতম সেরা এই দলটি এবার যেন পুরোপরি ভিন্নরূপে ধরা দিয়েছে কাতার বিশ্বকাপে। দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন ও জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে জাপান। সেখানে গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সমানতালে খেলে প্রথমার্ধেই ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে পেরেসিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া।
৪৩তম মিনিটে কর্নার পায় জাপান। কিকটি গোলমুখে না করে নিজেরা দেয়া নেয়া করতে করতে ক্রোয়েশিয়ার জালে বল নিয়ে যায় জাপান। শেষ ক্রসটি করেন রিতসু দোয়ান। গোলমুখে ভেসে আসা বলটিতে পা লাগিয়ে ক্রোয়েশিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন মায়েদা।
এর আগে দুই দলই বলতে গেলে খেলেছে সমান সমান। যদিও বল দখলে ছিল ক্রোয়েশিয়ারই বেশি। ৫৮ ভাগ। আর জাপানের ছিল ৪২ ভাগ। কিন্তু আক্রমণে কেউ কারো চেয়ে কম ছিল না। জাপানের জালে অন্তত দু’বার নিশ্চিত বল জড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলো ক্রোয়েশিয়া। জাপানও পেয়েছিল ২-৩ বার। শেষ পর্যন্ত গোলটি দিলো জাপানই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ক্রোয়েশিয়া। গোলও পেয়ে যায় তারা খুব দ্রুত। ৫৫ মিনিটে লভরেনের ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান টটেনহ্যাম তারকা ইভান পেরেসিচ। ২০১৪, ২০১৮, ২০২২ বিশ্বকাপ এবং ২০১৬ ও ২০২২ ইউরো কাপে গোল করা তৃতীয় খেলোয়ার হলেন পেরেসিচ। এর আগে এমন কীর্তি গড়েছেন কেবল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও জের্দান শাকিরি।
৬৩ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু মদরিচের দারুণ শট ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দেন জাপানিজ গোলরক্ষক গোন্ডো। এর ঠিক ৩ মিনিট প্রায় গোল হয়ে যাচ্ছিল ক্রোয়েশিয়ার। কিন্তু গোলরক্ষকের খুব সামনে থেকে বুদিমিরের নেওয়া শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ দিকে ক্রোয়েশিয়া গোলের চেষ্টা করলেও গোলমুখে তারা শট নিতে পারেনি। ফলে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ ব্যবধানে থেকেই শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
ম্যাচের ৯৬ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডের প্রাণ মদ্রিচকে তুলে নেন কোচ। ১০৫ মিনিটে জাপানের মিতোমার দূরপাল্লার শট দারুণভাবে রুখে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক। এছাড়া অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে বলার মত কোন দলই তেমন আক্রমণ করে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের মিনামিনোর প্রথম শটটাই রুখে দেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। জাপানের দ্বিতীয় শট নিতে আসেন মিতোমা। তার শটও ডান পাশে ঝুকে রুখে দেন তিনি। ক্রোয়েটদের হয়ে লিভায়া একটি শটে গোল করতে মিস করলেও জাপানিজ ইয়োশিদার শট রুখে দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। শেষে পাসালিচ গোল করে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-১ গোলের অসাধারণ একটি জয় এনে দেন।