শিরোনাম
২০১৮ বিশ্বকাপে এমবাপে যেখান থেকে শেষ করেছিলেন ২০২২ বিশ্বকাপ যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন এই পিএসজি তারকা। তাকে ভবিষ্যৎ তারকা ফুটবলার কেন বলা হয় তাই যেন প্রমাণ করে চলছেন দিনের পর। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডটাও শুরু করল ফ্রান্স দারুণভাবে। এমবাপের জোড়া গোল ও জিরুর দুর্দান্ত গোলে পোল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। লেওয়ানডস্কিদের বিদায় করে কোয়ার্টারে তারা অপেক্ষা করছে ইংল্যান্ড অথবা সেনেগালের জন্য।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ফ্রান্সকে ধরা হচ্ছিল বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি দাবিদার। গ্রুপ পর্বে অপ্রত্যাশিতভাবে তিউনিসিয়ার কাছে হারলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্তভাবে শুরু করেছে তারা। ম্যাচের ৪ মিনিটে গ্রিজম্যানের ফ্রি কিক থেকে ভারানের হেড গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ১৩ মিনিটে চৌয়ামেনির দূরপাল্লার শটে আবারো বাধা হয়ে দাঁড়ান পোলিশ গোলরক্ষক সিজনি।
২১ মিনিটে দুর্দান্ত কাউন্টার এটাক থেকে গোল প্রায় দিয়েই ফেলেছিল পোল্যান্ড। কিন্তু ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া লেওয়ান্ডস্কির শট বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। ২৯ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন অলিভিয়ের জিরু। বাম পাশ থেকে ডেম্বেলের বাড়ানো বলে উন্মুক্ত গোলপোস্ট পেয়েও গোলমুখে শট মারতে ব্যর্থ হন অলিভিয়ের জিরু।
৩৮ মিনিটে পোল্যান্ডও পেয়ে যায় গোলের সুবর্ণ সুযোগ। ট্রিপল সেভ করে দলকে রক্ষা করে ফ্রান্স। প্রথমে জিয়েলিনস্কির শট রুখে দেন হুগো লরিস। এরপর আবারো কামিনিস্কির শট ব্লক করেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারান। এর ঠিক দুই মিনিট পরেই ম্যাচে প্রথমবারের মত দলকে এগিয়ে দেন অলিভিয়ের জিরু। ডি বক্সের বাইরে থেকে এমবাপের বাড়ানো ডিফেন্স চেরা পাসে বা পায়ের শটে সিজনিকে পরাস্ত করে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান অলিভিয়ের জিরু। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে থিয়েরি অরির করা ৫১ গোলকে টপকে এককভাবে ৫২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার সিংহাসনে বসলেন জিরু। এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে ফ্রান্স। ৪৮ মিনিটে গ্রিজম্যানের শট সিজনি রুখে দিলেও রিবাউন্ড থেকে হার্নান্দেজের নেওয়া শট গোলবার ঘেষে চলে যায়। ৫৬ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপেও কিন্তু তার শটও ডান গোলপোস্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়।
তবে ৭৪ মিনিটে এমবাপেকের আর হতাশ হতে হয়নি। দারুণ এক কাউন্টার এটাক থেকে মাঝমাঠ থেকে জিরু বল পেয়ে দেন ডান পাশে থাকা ডেম্বেলেকে, ডেম্বেলের বাড়ানো বলে দারুণ গোলরক্ষক সিজনিকে বোকা বানিয়ে দারুণ শটে গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন এই ফ্রেঞ্চ তারকা। দুই বিশ্বকাপে ২৪ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ৮ গোল করলেন এমবাপে; যা একটি বিশ্ব রেকর্ডও বটে।
এই গোল করেও যেন ক্ষান্ত হননি এমবাপে। ৯১ মিনিটে লিলিয়ান থুরাম উলিয়েনের বাড়ানো বলে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে আবারো গোল করে দলকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় এনে দেন। বিশ্বকাপে ৫ গোল করে ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটের দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন এমবাপে। ম্যাচের শেষ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর উপামেকানোর হ্যান্ডবল হলে রেফারি ভিএআরের মাধ্যমে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। স্পট কিক থেকে পোল্যান্ডের হয়ে সান্ত্বনাসূচক গোল করে ব্যবধান ৩-১ এ নিয়ে আসেন বার্সা তারকা লেওয়ানডস্কি। এই হারে বিদায় নিশ্চিত হলো পোল্যাণ্ডের এবং ফ্রান্স চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে।