শিরোনাম
তিন মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয়ার্ধের দুই গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনাকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এর মাধ্যমে বার্সার পোলিশ তারকা রবার্ট লিওয়ানদোস্কির জন্য মিউনিখে ফেরার ম্যাচটি স্মরণীয় হলোনা।
মিউনিখের আলিয়াঁজ এরিনাতে ফরাসি ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজের কর্ণার থেকে হেডের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু তিন মিনিট পরেই লেরয় সানের দুর্দান্ত চিপের গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে বায়ার্ন। জার্মান এই এ্যাটাকারের অসাধারন এই গোলটি অনেকদিন বায়ার্ন সমর্থকদের মনে গেঁথে থাকবে। এর আগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক তারকা সানে এক গোল করার পাশাপাশি আরো এক গোলের যোগান দিয়েছিলেন। ঐ ম্যাচটিতেও বায়ার্ন ২-০ গোলে জয়ী হয়ে এবারের মৌসুমের শুভ সূচনা করে। খবর বাসসের।
অথচ কাল প্রথমার্ধের প্রায় বেশীরভাগ সময়ই বার্সা দাপট দেখিয়েছে। একের পর এক আক্রমনে তারা বায়ার্নের রক্ষনভাগকে বিপদে ফেলেছিল। কিন্তু লিওয়ানদোস্কির মিসের কারনে এগিয়ে যাওয়া হয়নি। ৫৪ মিনিটে সানে কাতালান গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান। এর তিন মিনিট আগে জসুয়া কিমিচের কর্ণার থেকে হেডের সাহায্যে বায়ার্নকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হার্নান্দেজ।
ম্যাচ পূর্ববর্তী অনুশীলনের সময় বায়ার্ন সমর্থকদের উষ্ণ অর্ভথ্যনা পেয়েছেন লিওয়ানদোস্কি। বায়ার্ন অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমি মনে করি লেভার জন্য এটা খুবই আবেগঘন একটি ম্যাচ ছিল। অনেকটাই তার বাড়ি ফেরার মত। কারন এখানে সে ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল সময় কাটিয়েছে। কাল ভাগ্য তার সহায় ছিলনা। ১৯ মিনিটে তার ভলিতে গোল না হওয়াটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের ছিল। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আজ আমরা রক্ষনভাগে দারুন পারফর্ম করেছি।’
১৯ মিনিটে পেড্রির বাড়ানো পাস থেকে নয়্যারকে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি লিওয়ানদোস্কি। তার শটটি অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এর এক মিনিট পরেই পোলিশ তারকা আবারো গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার তার হেড নয়্যার সহজেই তালুবন্দী করেন।
গ্রীষ্মে লিডস থেকে বার্সেলোনায় আসার পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনহা কাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন। ২৭ মিনিটে তার লো শটটি অল্পের জন্য নয়্যারকে পরাস্ত করতে পারেনি। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে আলফোনসো ডেভিস বক্সের একেবারে সামনে ওসমানে ডেম্বেলেকে ফাউল করলে বার্সা পেনাল্টির জোড়ালো আবেদন করেছিল। কিন্তু রেফারি ড্যানি ম্যাককিলে তা সরাসরি নাকচ করে দেন। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে ডেভিস স্পষ্টভাবেই ডেম্বলের পায়ে আঘাত করেছেন।
বিরতির পর বায়ার্ন কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যান মার্সেও সাবিজারের পরিবর্তে লিও গোরেৎকাকে মাঠে নামান। আর এতেই গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। গোরেৎকার রকেট গতির একটি শট রুখতে গিয়ে টান স্টেগান কর্ণার উপহার দেন বায়ার্নকে। আর সেই কর্ণার থেকেই স্বাগতিকদের লিড এনে দেন হার্নান্দেজ।
ম্যাচ শেষে গণমাধ্যমে নাগলসম্যান বলেছেন, ‘লিওয়ানদোস্কি খুব ভাল খেলেছে। বায়ার্নের দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে বলা যায় দলের সবাই খুশী সে আজ গোল পায়নি। কিন্তু কখনো কখনো সত্যিকার অর্থেই সে বিপদজনক হয়ে উঠেছিল। ম্যাচ শেষে সে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। কিন্তু এখন সে ভিন্ন একটি ক্লাবে খেলছে এবং প্রতিনিয়ত তাকে আমাদের নজড়ে রাখতে হচ্ছে।’
আগামী ২৬ অক্টোবর ফিরতি ম্যাচে ক্যাম্প ন্যু সফরে আসবে বায়ার্ন।
গ্রুপ-সি’র আরেক ম্যাচে এডিন জেকো এক গোল ও এক এ্যাসিস্টে ভিক্টোরিয়া প্লাজেনকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে ইন্টার মিলান। শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নেয়া ইন্টার ২০ মিনিটে জোয়াকুইন কোরেয়ার পাসে অনেক ফাঁকায় দাঁড়ানো জেকো ডান পায়ের জোড়ালো শটে প্লাজেন গোলরক্ষক জিনদ্রিচ স্টানেককে পরাস্ত করেন। ৭০ মিনিটে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে জেকোর এ্যাসিস্টে ডেনজেল ডামফ্রাইস ব্যবধান দ্বিগুন করেন।
বায়ার্নের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর ইন্টার এই প্রথম পয়েন্ট সংগ্রহ করলো। অন্যদিকে দুই ম্যাচেই পরাজিত প্লাজেন এখনো কোন পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি।