শিরোনাম
উদ্যাপন সে তো কত ধরনের হয়! এই যেমন পাঁচ বছর আগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গায়ের জার্সি খুলে রিয়াল সমর্থকদের দিকে জার্সি উঁচিয়ে ধরেছিলেন লিওনেল মেসি। ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে সের্হিও আগুয়েরোর ৪৪ বছরের লিগ শিরোপা-খরা ঘোচানোর মুহূর্ত উদ্যাপন; এই তো সেদিন, মেয়েদের ইউরোর ফাইনালে শিরোপা নির্ধারণী গোলের পর নিজের জার্সি খুলে মাথার ওপর ঘোরাতে ঘোরাতে উদ্যাপন করলেন ইংলিশ নারী ফুটবলার ক্লোয়ে কেলি—স্মরণীয় উদ্যাপনের তালিকা বানাতে গেলে সেটি বেশ বড়ই হয়ে যাবে।
সমর্থকেরাও প্রিয় দলের সাফল্য উদ্যাপন করেন নানাভাবে। সে ক্ষেত্রে একজন পেশাদার খেলোয়াড় আর একজন সমর্থকের উদ্যাপনের ভাষা হয়তো ভিন্ন হতেই পারে।
তাই তো মাঠের ক্লোয়ে কেলিদের অর্জন নিজের মতো করেই উদ্যাপন করেছেন হেডিংলির এক পিৎজার দোকানের মালিক। নিজের পিৎজার দোকানটির নামই পরিবর্তন করে ফেলছেন তিনি। নাম রেখেছেন ইংলিশ ফুটবলার লুচি ব্রোঞ্জের নামে। মজার ব্যাপার, সেই পিৎজার দোকানটি বিখ্যাত পিৎজার ব্র্যান্ড ‘ডোমিনোজ পিৎজা’র। দোকানটি ছিল ডোমিনোজের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি! ভাবা যায়! মালিক কতটা আবেগপ্রবণ হলে ডোমিনোজের ফ্র্যাঞ্চাইজির নামই বদলে ফেলেন!
নাম পরিবর্তনের জন্য অবশ্য ইংল্যান্ডের শিরোপা জয় পর্যন্ত অপেক্ষাও করা হয়নি। সুইডেনের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জয়ের পরই দোকানের নাম পরিবর্তন করা হয়। ইউরো সেমিফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন লুচি ব্রোঞ্জ। ফাইনালের পর তিনি এখন আবার নতুন কোনো খেলোয়াড়ের নামে দোকানটির নামকরণ করবেন কি না, সেটিই দেখার বিষয়।
লুচি ব্রোঞ্জের নামে দোকানের নামকরণের পেছনে অবশ্য অন্য একটি ইতিহাস রয়েছে।
২০১০ সালে লুচি ছিলেন লিডস মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তখন ডমিনোজ পিৎজার দোকানে কাজ করতেন তিনি। তরুণেরা পিৎজার দোকানে যেসব কাজ করেন, তেমনই আর কি! সে জীবন পেরিয়ে পরবর্তী সময়ে ফুটবল মাঠ দাপিয়ে বেরিয়েছেন এই নারী ফুটবলার। খেলেছেন এভারটন, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি মতো ক্লাবের হয়ে। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে তাঁর অভিষেক ২০১৩ সালে। আর ইংল্যান্ডের হয়ে গত রোববার তো ইতিহাসেরই সাক্ষী হয়ে গেলেন তিনি। ওয়েম্বলিতে উঁচিয়ে ধরলেন শিরোপা।
ব্যক্তিগত অর্জনের খাতাও বেশ পরিপূর্ণ এই রাইট ব্যাকের। ২০১৮-১৯ মৌসুমে জিতেছেন ‘উয়েফা উইমেন্স প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার। ২০২০ সালের ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ পুরস্কার উঠেছিল তাঁর হাতেই।
পিৎজার দোকান থেকে ফুটবল মাঠ—লুচির এই পথচলা নিয়ে গর্বের শেষ নেই ডমিনোজ পিৎজার (বর্তমানে লুচিস পিৎজা) সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি–মালিকের। নিশ্চিতভাবে গর্ব করছেন পুরো ইংল্যান্ড দলকে নিয়েই!