শিরোনাম
আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তাল ঢেউতে দিশেহারা বাংলাদেশ হয়তো ভয়টা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ঠিকঠাক। ব্যাটে-বলে কোনোদিকেই নিজেদের ছাপ রাখতে পারেনি টাইগাররা। ডমিনিকায় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা বলা যায় বৃষ্টি বাঁচিয়ে দেয়। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে এসে হাবুডুবু খেতে হলো আটলান্টিক পাড়ের উইন্ডসর পার্কে। ক্যারিবীয়দের দেয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টি-টোয়েন্টির মেজাজ দেখাতে পারেননি টাইগার ব্যাটাররা।৬ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে হারতে হয়েছে ৩৫ রানে।
সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেনরা রান করতে পারলেও খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে। বড় লক্ষ্য টপকাতে নেমে প্রথম ওভারটা কাটিয়ে দিলেও দুই ওপেনার লিটন দাস ও এনামুল হক বিজয় খেই হারান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওবেদ ম্যাককয়ের কাছে। ওভারের প্রথম বলে লিটন দাস (৫) হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন ডিপ মিড উইকেটে। সহজ ক্যাচ নেন শামারাহ ব্রুকস। পরের বলে বোল্ড হন বিজয়। দীর্ঘ ৭ বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরা বিজয় প্রথম ম্যাচে করেন ১৬ রান, আজ দ্বিতীয় ম্যাচে করেন মাত্র ৩ (৪) রান।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ব্যাট মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জ্বলে ওঠার আভাস দিলেও নিভে যান মুহূর্তে। ওডেন স্মিথের ওভারে এক চার ও এক ছয়ে ১১ রান তুললেও শেষ বলে ক্যাচ দেন ম্যাককয়ের হাতে।
এরপর সাকিব-আফিফ জুটি ওয়ানডে মেজাজে খেলেছেন, স্কোর বোর্ডের যোগ ৫৫ রান করে জুটি ভাঙ্গে ২৭ বলে ৩৪ রান করা আফিফের বিদায়ে।
নুরুল হাসান সোহান এদিন ৭ রান করতে খেলেন ১৩ বল। থিতু হবার চেষ্টায় থাকা সোহানকে ফেরান আকিল হোসেন। ৯৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মোসাদ্দেককে নিয়ে ৪৫ বলে পাঁচটি ৪ ও ১ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেন সাকিব।
ততোক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। অর্ধশতক পূর্ণ করা সাকিব দ্রুত রান তুলতে থাকলেও সেটি ছিল কেবল হারের ব্যবধানটা কমানোর। সাকিব মোসাদ্দেকের জুটি থেকে আসে ২৮ বলে ৫৩ রান। ১১ বলে ১৫ রান করা মোসাদ্দেকের বিদায়ে ভাঙে জুটি। সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে খেলেন ৫২ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ৬৮ রানের ইনিংস।
উইন্ডিজের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন ওবেদ ম্যাককয় ও রোমারিও শেফার্ড। ১টি করে উইকেট নেন আকিল হোসেইন ও ওডেন স্মিথ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের আভাস দেন ক্যারিবীয় ব্যাটাররা। দুই ওপেনারের ব্যাটে ক্যারিবীয়দের শুরুটাও হয় দুর্দান্ত। তাসকিনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই ১টি করে চার-ছয়ে কাইল মায়ার্স নেন ৪ বলে ১৩ রান। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারে শেখ মেহেদী হাসান বোল্ড করে ফেরান ৯ বলে করেন ১৭ রান করা মায়ার্সকে।
চতুর্থ ওভারে সাকিব তার প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে তুলে নেন শামারাহ ব্রুকসকে (০)। প্রথম ম্যাচ না খেললেও দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে নিজের প্রথম ওভারে বিদায় করেন ৩৪ (৩০) রান করা নিকোলাস পুরানকে। এরপর আর তাকে বোলিংয়েই আনা হয়নি।
১০০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সময়ের সঙ্গে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ব্র্যান্ডন কিং ও রোভম্যান পাওয়েল। দুজনে ২৮ বলে তোলেন ৬৩ রান। সাকিব আল হাসানের চতুর্থ ওভারে এক চার আর তিন ছক্কা হাঁকান পাওয়েল। ওই ওভারে আসে ২৩ রান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন দুই ছক্কায় ২১ রান। ৩ ওভার করা তাসকিন দেন বিনা উইকেটে ৪৬ রান।
চড়াও হওয়া ব্র্যান্ডন কিংকে ৫৭ (৪৩) রানে বিদায় করেন শরিফুল ইসলাম। শেষ ওভার করতে এসে রোমারিও শেফার্ডকেও (৩) ফেরান শরিফুল। কিং বিদায় নিলেও পাওয়েল তুলে নেন অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে এনে দেন বড় সংগ্রহ। সঙ্গে ওডেন স্মিথ শরিফুলের শেষ ওভারে নেন ১১ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২ উইকেট নেন শরিফুল। ১ টি করে উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী, সাকিব ও মোসাদ্দেক।