শিরোনাম
অভিষেকটা হয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই, চট্টগ্রামে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ওই টেস্টে বাংলাদেশ প্রায় জিতেই গিয়েছিল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন অভিষিক্ত কাইল মায়ার্স। অনবদ্য এক ডাবল সেঞ্চুরি করে ব্সলেন তিনি। তার খেলা অপরাজিত ২১০ রানের ওপর ভর করে ৩ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছিল ক্যারিবীয়রা।
এরপর ১১টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন মায়ার্স। এর মধ্যে সেঞ্চুরি তো দুরে থাক, হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন কেবল দুটি। নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এবার। প্রতিপক্ষ সেই বাংলাদেশই।
আবার এমন এক সময়ে এসে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন, যখন দল খুবই বিপদে। ১৩১ এবং ১৩২ রানের মাথায় পরপর তিনটি উইকেট পড়ে গেলো। এমন এক বিপর্যয়ের সময় এসে দলের হাল ধরলেন তিনি। যেমনটা ধরেছিলেন প্রায় দেড় বছর আগে চট্টগ্রাম টেস্টেও।
কাইল মায়ার্সের দুই সেঞ্চুরির প্রকৃতিটা প্রায় একই। এবার সেঞ্চুরি পূরণের আগে ছিলেন ১৯০ রানে। শরিফুল ইসলামকে পরপর দুই বলে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় দিন শেষে তিনি অপরাজিত থাকলেন ১২৬ রানে।
১৩২ রানে ৪ উইকেট হারানোর নিজে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে বলতে গেলে ক্যারিবীয়দের তুলে এনেছেস এবং ১০০ প্লাস লিড নিতে সক্ষম হয়েছেন। বিনা উইকেটে ১০০ থেকে ১৩২ রানে ৪ উইকেট নেই ক্যারিবীয়দের। তাদের চোখেমুখে যে চিন্তার চাপ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেটা বোঝাই যায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান নির্বাচক ডেসমন্ড হেইন্স ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপকে লাঞ্চ ব্রেকের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং নিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের জন্য কিছু সময় বেশ ভালো ছিল। ক্রেইগ এবং ক্যাম্পবেলের ব্যাটের আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছিল। তবে আপনি জানেন, এই ধরনের উইকেটে খেলতে গেলে মাঝেমধ্যে এমনটা হতে পারে। আমাদের প্রয়োজন শুধু কিছু ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা।’
‘আমি মনে করি, যা ঘটেছে তাতে আমরা নিজেদেরকে কিছুটা ভাসমান নৌকার ওপর দেখতে পাচ্ছি। এ সময় সবারই চাওয়া হচ্ছে অন্তত ভালো একটি জুটি গড়ে উঠুক। এটাই হয়তো ভালো। তবে আমি আরও বেশি কিছু চিন্তা করছি। অবশ্যই আপনার অ্যাপ্রোচ পুরোপুরি ইতিবাচক হওয়া বাঞ্চনীয়। এবং আমি মনে করি, উদ্দেশ্যটাও হওয়া উচিৎ রান বের করে আনা। রান’ই হলো সবকিছু। অবশ্যই আপনাকে রানের দিকে তাকাতে হবে। দীর্ঘসময় ধরে ব্যাটিং করে যাওয়াটা অবশ্যই ভালো। তবে সে সঙ্গে রানও দরকার।’
তবে কাইল মায়ার্স যখন কিছুটা আগ্রাসীভাবে ব্যাটিং শুরু করেন, তখন বাংলাদেশই উল্টো ডিফেন্সিভ মুডে চলে যায়। মেহেদী হাসান মিরাজ চেষ্টা করেছিলেন মানসিক বাধা অতিক্রম করে পাল্টা আঘাত হানতে। মিরাজের হাতে বেশ কয়েকবার আউট হয়েছিলেন কাইল মায়ার্স।
সফরকারী বাংলাদেশ দলের বোলাররা নানা ট্রিকস খাটিয়ে চেষ্টা করছিলেন মায়ার্সের উইকেট নিতে। বিশেষ করে মেহেদী হাসান মিরাজ। তার লেগ স্ট্যাম্পের ওপর টানা বল রেখে চেষ্টা করছিলেন মায়ার্সের ধৈয্যের বাধ ভেঙে দিতে।
দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে মায়ার্স মেহেদীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, ‘ কোনো প্রয়োজন নেই (বিশেষ করে মেহেদীকে সামলানোর বিষয়টা)। আমি মনে করি, সে একজন ভালো বোলার। তবে আমি কখনোই মাথায় আনিনি যে এই বোলারের বলে আমি এর আগে বেশ কয়েকবার আউট হয়েছি। একজন বোলার যখন কোনো ভালো ডেলিভারি দেবে, তখন তিনি যে কোনো সময় যে কারো উইকেট পেতে পারেন। সুতরাং, আমি কোনো নামের বিরুদ্ধে তখন খেলতে চাইনি। আমি শুধু খেলেছি বলের বিরুদ্ধে।’