শিরোনাম
অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন! রূপকথা বললেও বাড়াবাড়ি হবে না। যে ম্যাচে নিশ্চিত বিদায় জেনে মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্বাগতিক সমর্থকরা, সেই ম্যাচেই বড় জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করলো রিয়াল মাদ্রিদ।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ৮৯ মিনিট পর্যন্তও ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনাল বলতে গেলে হাতের মুঠোয় ছিল তাদের। সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে রিয়াল ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ৩-১ গোলে। ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে ৬-৫ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনালে নাম লিখিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
কি উপভোগ্য এক রাত কাটলো ফুটবলপ্রেমীদের! আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকেই জমে উঠে ম্যাচ। বল পজিশনে সিটি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও শট ছিল প্রায় সমানে সমান। সিটি ১৫ শটে ১০টিই রাখতে পারে লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১৪ শট নিয়ে ৫টি লক্ষ্যে রাখে রিয়াল, যার তিনটি আবার গোল!
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। দানি কার্ভাহেলের উঁচু ক্রসে করিম বেনজেমা হেড নিলে তা চলে যায় বারের ওপরে। ১২ মিনিটে বেনজেমাই সুযোগ পেয়ে মেরে দেন ওপর দিয়ে।
এরপর টানা বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে সিটি। কেভিন ডি ব্রুইন, বানার্দো সিলভা, গ্যাব্রিয়েল হেসুসরা গোল বানাতে পারেননি। ৩৯ মিনিটে ফিল ফোডেনের অনেক দূর থেকে নেওয়া জোরালো শটে সিটি এগিয়ে যেতে পারতো। ঝাঁপিয়ে পড়ে তা নস্যাৎ করেন রিয়াল গোলরক্ষক কর্তোয়া।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। অবশেষে ৭৩ মিনিটের মাথায় গোলমুখ খোলে সিটি। বার্নাদো সিলভা বল বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারালেও সেটা পেয়ে যান ডানদিকে ছুটে যাওয়া রিয়াদ মাহরেজ। চোখের পলকে তা জালে জড়িয়ে দেন ফরাসি-আলবেনিয়ান এই উইঙ্গার।
ম্যাচের তখন ৮৯ মিনিট পেরিয়েছে। সিটির জয় সময়ের ব্যাপার। এমন মুহূর্তে রদ্রিগোর জাদু। ১ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে রিয়ালকে অবিশ্বাস্যভাবে লড়াইয়ে ফেরান এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
৯০ মিনিটে বেনজেমার ডান দিক থেকে আলতো পায়ের ক্রস বক্সের মাঝখানে একদম গোলরক্ষকের সামনে পেয়ে জালে জড়ান রদ্রিগো। পরের মিনিটে মার্কো অাসেনসিওর উঁচু ক্রস লাফিয়ে উঠে হেড করেন তিনি। ২-১ গোল এগিয়ে থাকা রিয়াল খেলা টেনে নেয় অতিরিক্ত সময়ে (দুই লেগ মিলিয়ে দুই দলের সমান গোল তখন)।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বেনজেমার নিঁখুত শট কোনোমতে ফেরান সিটি গোলরক্ষক এদেরসন। তবে পঞ্চম মিনিটে এই বেনজেমাকেই বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়ে দলের সর্বনাশ ডাকেন ডায়াস। ঠান্ডা মাথার পেনাল্টিতে রিয়ালকে ফাইনালে তোলা গোলটি করেন বেনজেমা।
আগামী ২৯ মে শিরোপা লড়াইয়ে আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল।