শিরোনাম
'আমরা সেখানে যাব এবং তাদের হারাব।' বার্সেলোনার বিমানে চড়ার আগেই কথাটা বলেছিলেন আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের ক্রীড়া পরিচালক মার্কাস ক্রোয়েশা।
হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার রাতে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সেলোনাকে বল–কয়েই হারিয়ে দিল ইউরোপিয়ান ফুটবলে সাফল্যের বিচারে 'পুঁচকে' ফ্রাঙ্কফুর্ট। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে অবনমিত বার্সাকে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় দিয়ে দিল জার্মান ক্লাবটি।
৩০ হাজার সমর্থক নিয়ে বার্সা অভিযানে এসেছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট। হাজার পাঁচেকের বেশি টিকিট পাওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু ঘটনাচক্রে টিকিট পেয়ে গেছেন তাদের প্রায় সবাই। এই সমর্থকেরা বাকি জীবন গল্প করার মতো ম্যাচের সাক্ষী হয়ে গেলেন। প্রিয় ক্লাব যে বার্সার ডেরায় গিয়ে বার্সাকে হারিয়ে দিয়েছে ৩–২ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৪–৩ গোলের জয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট উঠে গেছে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে।
লিওনেল মেসিকে ছাড়া এবারই প্রথম মৌসুম বার্সার। ইউরোপা লিগে অবনমনের পর থেকেই ঘরের মাঠে মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় জয়হীন মেসিহীন বার্সা। শেষ ষোলোর প্লে–অফ ও শেষ ষোলোতে নাপোলি ও গালাতাসারাইয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করলেও দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে জিতে পরের রাউন্ডে উঠেছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে লেখা হলো উল্টো গল্প। নিজেদের মাঠে বার্সাকে রুখে দেওয়ার পর ফ্রাঙ্কফুর্ট এবার বার্সেলোনায় গিয়ে দ্বিতীয় লেগটা জিতল দাপটের সঙ্গে খেলে। ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা একটু জেগে উঠে দুই গোল করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। নিজেদের মাঠে হেরে বিদায় নিতে হলো বার্সাকে, যারা সব প্রতিযোগিতা মিলে টানা ১৫ ম্যাচে অপরাজিত ছিল।
বার্সার মাঠে ফ্রাঙ্কফুর্ট এগিয়ে যায় ম্যাচ শুরুর চার মিনিট না হতেই। তৃতীয় মিনিটে বার্সা ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ফেলে দেন ফ্রাঙ্কফুর্ট ফরোয়ার্ড ইয়েসপার লিন্ডস্ট্রমকে। বার্সা গোলরক্ষক মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেনকে উল্টো দিকে ফেলে পেনাল্টি থেকে গোল করেন সার্বিয়ান উইঙ্গার ফিলিপ কস্তিচ।
ব্যবধানটা দ্বিগুণ হয় ৩৬ মিনিটে। কী অসাধারণ এক গোলই না পেয়েছেন কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল বোরে! এ গোলেও অবদান রেখেছেন কস্তিচ। তাঁর কাছ থেকে বল পেয়েই বক্সের বাইরে থেকে গোলার মতো এক শট বোরের। সেই শট ঠেকানোর সাধ্য ছিল না টের স্টেগেনের।
প্রথমার্ধে প্রাধান্য দেখানো ফ্রাঙ্কফুর্ট ম্যাচটাকে বার্সার নাগালের বাইরে নিয়ে যায় ৬৭ মিনিটে। কস্তিচ পেয়ে যান নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল। কামাদার কাছে থেকে বার্সার বক্সে বল পেয়ে জালে পাঠাতে ভুল করেননি সার্বিয়ান উইঙ্গার।
৮৪ মিনিটে বার্সার সের্হিও বুসকেতসের করা গোলটি বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। যোগ করা ৯ মিনিটের প্রথম মিনিটে সেই বুসকেতসের গোলেই ব্যবধান কমায় বার্সা। এরপর যোগ করা সময়ের অন্তিম মুহূর্তে পেনাল্টি পেয়ে যায় বার্সা। মেম্ফিস ডিপাই দলকে দ্বিতীয় গোলটি এনে দিলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আবার কিক অফ হতে না হতেই যে বেজেছে রেফারির শেষ বাঁশি।
সেই বাঁশিটা নিশ্চিত 'বিষের বাঁশি' মনে হয়েছে বার্সা সমর্থকদের কাছে।