শিরোনাম
‘বার্সেলোনা কতটা উন্নতি করেছে, সেটা দেখানোর উপযুক্ত মঞ্চ এল ক্লাসিকো’- সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শক্তিশালী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এভাবেই নিজের দলের অবস্থান জানিয়েছিলেন বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ।
তবুও ঘরের মাঠে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল রিয়ালই। বিশেষ করে সর্বশেষ পাঁচ ‘এল ক্লাসিকো’তে জয় পেয়েছিল লস ব্লাঙ্কোসরা। এবারের লিগে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল দলটি। চলতি মৌসুমে বার্নাব্যুতে হারেনি কোনো ম্যাচও। অথচ বার্নাব্যুতে রিয়ালকে রীতিমতো ধরাশায়ী করেছে বার্সেলোনা। গোলের হালি পূর্ণ করেছে রিয়ালের জালে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এল ক্লাসিকোতে ৪-০ ব্যবধানের বড় জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। অথচ ম্যাচের আগে এমন ফলাফলের কথা বললে বিশ্বাস করতো না স্বয়ং বার্সা ভক্তরাও।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালকে স্রেফ উড়িয়েই দিয়েছে বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবটির চিরাচরিত ফুটবল খেলার ধরন ধরে রেখে খেলেছে অবিশ্বাস্য সুন্দর ফুটবল।
বার্নাব্যুতে বল দখল থেকে শুরু করে আক্রমণ, পাস অ্যাকুরেসি সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল জাভির দল। ম্যাচে ৬০ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল বার্সা। আক্রমণ করেছে ১৮টি, যার ১০টি শট রেখেছিল গোলমুখে। দুই অর্ধে দুটি করে গোল করে বার্সেলোনা। ম্যাচে তাদের হয়ে গোল করেন পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং, রোনালদ আরাহো এবং ফেরান তোরেস।
অপরদিকে করিম বেনজেমার অনুপস্থিতিতে রিয়ালের স্ট্রাইকাররা গোলমুখে জোরালো আক্রমণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মাত্র ৪টি শট রাখতে পেরেছে লক্ষ্যে।
গোলের দেখা না পেলেও ঘরের মাঠে শুরুর আক্রমণ করে রিয়ালই। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে রদ্রিগো ডি-বক্সে ঢুকে শট নেয়। যদিও লক্ষ্যে থাকেনি সেই শট। এরপর ফেদে ভালভারদে গোলমুখে নিচু শট করেন, যা ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক আন্দ্রে টের স্টেগান।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে প্রথম শক্ত আক্রমণ করে বার্সা। অবামেয়াংয়ের দারুণ শট কর্তোয়া ফিরিয়ে দেওয়ার পর ফিরতি বলে দেম্বেলে আবার শট নেন। এবারও রিয়ালের ত্রাতা হয়ে আসেন কর্তোয়া। এরপরে বার্সা আরও দুটি শট নিলেও তা পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
ম্যাচের ২৯ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোল পেয়ে যায় বার্সা। দেম্বেলের ক্রস থেকে রিয়ালের জালে বল জড়ান অবামেয়াং। গোল পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে বার্সা। ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় দলটি। আবারও অ্যাসিস্ট করেন দেম্বেলে। তার করা ক্রস থেকে গোল করেন বার্সার উরুগুয়ের ডিফেন্ডার আরাহো।
প্রথমার্ধে দুই গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বার্সা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ায়। অবামেয়াংয়ের পাস থেকে গোল করে ফেরান তোরেস। তিন গোলের শোক কাটিয়ে না উঠতেই ম্যাচের ৫১তম মিনিটেই গোলের হালি হজম করে রিয়াল। জেরার্ড পিকের পাস থেকে ম্যাচে নিজের জোড়া গোল করে ৪-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন অবামেয়াং।
এই গোল নিয়ে বার্সার জার্সিতে অবামেয়াংয়ের গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ৯। এদিকে রিয়ালের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত খেলা পাঁচ ম্যাচেই গোল পেয়েছেন গ্যাবনের এই অধিনায়ক। যা একবিংশ শতাব্দীতে রিয়ালের বিপক্ষে যেকোনো ফুটবলারের জন্যই প্রথম এমন গোল করার কীর্তি।
এই ম্যাচ দিয়ে বার্সা যেন বার্তা দিয়ে রাখলো লা লিগার অন্য দল এবং রিয়ালকেই, জাভির হাত ধরে পালাবদলের অধ্যায় শেষে, নতুন করে ফিরছে পুরানো বার্সেলোনা।
এদিকে এই ম্যাচ হারলেও লিগে ২৯ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শীর্ষে আছে রিয়াল। সমান ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সেভিয়া। এদিকে এক ম্যাচ কম খেলা বার্সা এই জয়ে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে।