বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের শক্তিশালী ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা

ফানাম নিউজ
  ০৮ মার্চ ২০২২, ১৮:৩৭

এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়ারা সবচেয়ে শক্তিশালী ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। তবে জাতীয় দল আগে না আইপিএল আগে? বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে এই কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা। 

যদিও প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগার আহ্বান জানিয়েছিলেন, আইপিএলের চেয়ে জাতীয় দলের হয়ে খেলাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে।

যদিও আইপিএলের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের নিজেদের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছিল তারা কোথায় খেলবেন, সে সিদ্ধান্ত নিতে। শেষ পর্যন্ত তারা জাতীয় দলের হয়েই খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন।

তিন ফরম্যাটেই দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের হয়ে খেলেন, এমন ১১জন ক্রিকেটার এবার রয়েছেন আইপিএলের ১০ দলের চুক্তির তালিকায়। এদের মধ্যে আটজনকে নিয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণা করলো দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড।

সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে শক্তিশালী ওয়ানডে স্কোয়াডই ঘোষণা করেছে তারা। শুধুমাত্র ফিটনেস সমস্যার কারণে অ্যানরিখ নরকিয়া এবং সিসান্দা মাগালাকে দলে রাখতে পারেনি তারা।

আইপিএলের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি, রাশি ফন ডার ডুসেন, ডেভিড মিলার, কুইন্টন ডি কক, এইডেন মারক্রাম, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস এবং মার্কো জানসেন- এই আটজনের সবাইকে রাখা হয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ঘোষণা করা স্কোয়াডে।

১৮ মার্চ থেকে জোহানেসবার্গে শুরু হবে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ২০ মার্চ দ্বিতীয়টি এবং ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ওয়ানডে। আইপিএল শুরুর তিনদিন আগে শেষ হবে এই সিরিজটি। ২৬ মার্চ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এবারের আইপিএলের। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের যারা ওয়ানডে খেলে আইপিএলে যোগ দিতে ইচ্ছুক, তাদের প্রথম দিকে ১/২টি করে ম্যাচ মিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ, ২৩ তারিখ ওয়ানডে শেষ হলেও এরপর ভারতে এসে আইপিএলে নিজ নিজ দলের সঙ্গে যোগ দিতে হলে অবশ্যই তিনদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এরপর তারা প্রবেশ করতে পারবে বায়ো-বাবল সিস্টেমে। তবে, এই নিয়ম শিথিলযোগ্য ওইসব ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে, যারা অন্য কোনো বায়ো-বাবল থেকে আসবেন।

বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজটি অনুষ্ঠিত হবে ‘ম্যানেজড এনভায়রনমেন্ট’ অবস্থায়। যেটা বায়ো-বাবল সিকিউরিটি ব্যবহার চেয়ে আরও শিথিল। দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রতি তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটও এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আয়োজন করেছে।

এর অর্থ, ‘ম্যানেজ এনভায়রনমেন্টে’ থাকা যে কোনো ক্রিকেটার সিরিজ চলাকালীন হোটেল রুমের বাইরে যে কোনো খোলা জায়গায় যাওয়ার অনুমতি পায়, এমনকি সমূদ্র সৈকত, পার্ক কিংবা রেস্টুরেন্টেও যাওয়ার অনুমতি রয়েছে তাদের। শুধু তাই নয়, সিরিজ চলাকালে রাবাদা, এনগিদি এবং রাশি ফন ডার ডুসেনদের হোটেলের চেয়ে নিজের বাসায় থাকারও অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সুতরাং, এখনই বলা যাচ্ছে না, বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষে তারা আইপিএল খেলতে এসে কী ধরনের কোয়ারেন্টাইন নিয়মের মধ্যে পড়বে।

তবে সমস্যা বাধবে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলবে তখন। কারণ, টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ৩১ মার্চ। শেষ হবে এপ্রিলের ১২ তারিখ। এই সময়ের মধ্যে টেস্ট দলে থাকা যেসব ক্রিকেটারের আইপিএল চুক্তি রয়েছে, তারা কী করবে?

জাতীয় দলের হয়ে খেলাকে তারা বেশি গুরুত্ব দেবেন নাকি আইপিএল খেলাকে? দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের নির্বাচক কমিটির আহ্বায়ক ভিক্টর এমপিটসাঙ বলেন, ‘ওয়ানডে স্কোয়াডের যে সব খেলোয়াড় টেস্ট খেলবে না, তারা ওয়ানডে সিরিজের পর আইপিএলের জন্য চলে যেতে পারবেন। আমার ৬ জন ক্রিকেটারের কাছ থেকে পরিষ্কার ব্ক্তব্য চাই, যারা টেস্ট সিরিজের দলেও থাকবেন।’

এই ৬ জন ক্রিকেটারই রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াডের পরিকল্পনায়। তারা হলেন রাবাদা, এনগিদি, ফন ডার ডুসেন, মারক্রাম, জানসেন এবং নরকিয়া। এর মধ্যে নরকিয়া হিপ ইনজুরির কারণে সর্বশেষ ভারত এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজ মিস করেছিলেন। এমনকি গত বছর নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর তিনি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচই খেলেননি। এমপিটসাঙ জানিয়েছেন, নরকিয়ার জন্য আইপিএলে খেলাও হয়তো কঠিন হয়ে যেতে পারে এবার।

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজটা হচ্ছে বিশ্বকাপ সুপার লিগের ম্যাচ। যেখান থেকে আগামী বিশ্বকাপের দল বাছাই করা হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা রয়েছে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতে। কারণ, সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে সুপার লিগে প্রোটিয়ারা রয়েছে ১০ নম্বরে। অন্যদিকে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে সবার শীর্ষে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্বাগতিক প্রোটিয়াদের বিপক্ষে কখনো সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। যদিও ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। অন্যদিকে বাংলাদেশের কোচিং স্টাফে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান প্রাধান্য। প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো, বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড দক্ষিণ আফ্রিকান।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে স্কোয়াড

টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), কেশভ মাহারাজ (সহ-অধিনায়ক), কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি, রাশি ফন ডার ডুসেন, ডেভিড মিলার, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), এইডেন মারক্রাম, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, মার্কো জানসেন, জুবায়ের হামজা, জানেমান মালান, ওয়াইন পার্নেল, আন্দিল পেহলুকাইয়ো, তাবরিজ শামসি এবং কাইল ভেরাইনে।

সূত্র: জাগো নিউজ