শিরোনাম
পাকিস্তানের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ ক্রিকেটের সবুজ গালিচায় লড়ছেন দেশের জন্য, সঙ্গে আরেকটা কঠিন কাজও সামলে নিচ্ছেন দারুণভাবে।
পাকিস্তানের ক্রিকেটে প্রথম নারী ক্রিকেটার, যিনি ছুটি পেয়েছিলেন মাতৃত্বকালীন সময়ে। গত বছরের ১৭ এপ্রিলে ছুটি নেওয়ার সঙ্গে আলোড়ন পড়ে যায় গোটা বিশ্বে। একজন ক্রিকেটার মা হওয়ার পর কীভাবে ফিরবেন ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে! এই শঙ্কাটা শুধু বিসমাহ মারুফেরই ছিল না, ছিল সব ক্রিকেট ভক্তেরও।
গত বছরের আগস্টে ‘মা’ হওয়া বিসমাহ সেসব শঙ্কা উড়িয়ে ঠিকই ফিরেছেন ক্রিকেটে। যে ফর্ম আর ফিটনেস নিয়ে ভয়ে ছিলেন বিসমাহ, তার সবই ফিরে পেয়েছেন। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে হয়ে উঠেছেন বিশ্বের সব নারী খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা।
চলতি ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নেতৃত্বে দিতে নেমেছেন বিসমাহ। সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন ছোট্ট ফাতিমাকে। গত রোববার ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নামার আগে দেখা যায়, ফাতিমাকে কোলে নিয়ে মাঠে ঢুকতে। ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান হারলেও সেসব ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্র হয়ে ওঠেন মা-মেয়ে।
পাক-ভারত সীমান্তের কাঁটাতার যেন এক করে দেন ফাতিমা। ভারতের ক্রিকেটাররা পাকিস্তানের ড্রেসিং রুমে এসে খেলায় মেতে ওঠেন ফাতিমার সঙ্গে। খুনসুটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ছোট্ট ফাতিমার সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ছবি মন কাড়ে ক্রিকেটের ঈশ্বর খ্যাত শচীন টেন্ডুলকারেরও। টুইটে শচীন লেখেন, ‘কী অসাধারণ একটা মুহূর্ত! ক্রিকেটে মাঠের সীমানা থাকলেও মাঠের বাইরে কোনো সীমানা নেই।’
অথচ, এই গল্পটা লেখার আগে ছিল কত ভয়, কত শঙ্কা। সেসব শঙ্কা উড়িয়ে বিসমাহ মাঠে ফিরলেও ফাতিমার কান্না শুনে মাঠ ছাড়তে না পারার আক্ষেপ তো থেকেই যায়। অবশ্য খেলার সময়টায় ফাতিমাকে সামলান নানি। তাই তো বিসমাহ তার মাকে নিয়ে এসেছেন নিউজিল্যান্ডেও।
কাশ্মীরে জন্ম নেওয়া বিসমাহকে নিয়ে তার মায়ের স্বপ্ন ছিল, ডাক্তার হবে মেয়ে। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি পার করেই বাইশ গজের লড়াইয়ে নেমে পড়েন মায়ের স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে। ফাতিমার ক্রিকেটার ‘মা’ কী তার মায়ের মতো স্বপ্ন দেখেন, মেয়ে ক্রিকেটার হবে! ফাতিমা কী হবেন, সেটা আপাতত সময়ের হাতেই তোলা থাক।