শিরোনাম
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বাহিরে ওয়ার্নের ব্রোঞ্জের তৈরি ভাস্কর্যটা যেখানে আছে, ভক্তরা সেখানে কেবল ফুল দিয়েই শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন না, সঙ্গে আনছেন কয়েকটা জিনিস—বিয়ারের বোতল, সিগারেট ও মাংস। শেন ওয়ার্ন যে তাঁর জীবনে এই তিনটি জিনিস থেকে বেরই হতে পারেননি।
ফিটনেস নিয়ে কখনোই খুব বেশি ভাবতেন না কিংবদন্তি লেগ স্পিনার। বরং ফিটনেস নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি কাছের মানুষ ইয়ান চ্যাপেলের পুষ্টিবিদ স্ত্রী-ও বারবার বলেছেন, ‘নিজের ডায়েট ঠিক করো।’ হয়তো অস্ট্রেলিয়া দল থেকে বাদই পড়ে যেতেন, কিন্তু তাঁর আঙুল আর কবজির জাদু কীভাবে উপেক্ষা করবে অস্ট্রেলিয়া! সে কারণেই দলের সতীর্থদের চেয়ে ফিটনেসে অনেক পিছিয়ে থাকলেও তিনি অস্ট্রেলিয়া দলে খেলেছেন, আর উইকেটের পর উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। জাদুকরেরা যে আর দশটা লোকের চেয়ে ভিন্নই হন।
খাওয়াদাওয়া খুবই পছন্দ করতেন। মেনুতে অবশ্যই থাকত মাংসজাতীয় খাবার। বিয়ার তো খেতেন পানির মতো করেই। আর সিগারেট। কতবার যে ধূমপান করে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন! অথচ এই ওয়ার্নই মৃত্যুর আগে খাদ্যাভ্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছিলেন। থাইল্যান্ডের কো সামুইয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েও একই ধরনের খাদ্যাভ্যাস ধরে রেখেছিলেন। কেবল পানীয় পান করে দিনের পর দিন কাটাচ্ছিলেন।
অস্ট্রেলীয় টেলিভিশন চ্যানেল নাইন টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ার্নের দীর্ঘদিনের ম্যানেজার জেমস এরিনকন জানিয়েছেন, ‘সে অদ্ভুত ধরনের একটা ডায়েট অনুসরণ করছিল। এতে ১৪ দিন ধরে কেবল পানীয় পান করেই কাটিয়ে দিত সে। কয়েকবার সে এমন করেছে। মৃত্যুর আগেও সে এমন ডায়েট অনুসরণ করছিল।’
এরিকসেন জানিয়েছেন, ওয়ার্নের খাবারের ব্যাপারটি ছিল অস্বাভাবিক। হয় তিনি পানীয় খেয়ে দিন কাটাতেন, নয়তো এমন খাবার খেতেন, যা শরীরের জন্য বেশ ভারী, ‘তাঁর খাদ্যাভাস ছিল অস্বাভাবিক, মাঝামাঝি কিছু ছিল না। হয় সে পানি খেয়ে দিন কাটিয়ে দিত, নয়তো তাঁর খাবারে থাকত রুটি, মাখন কিংবা লাসানিয়া, মাংস—এসব।’
এদিকে থাইল্যান্ডের পুলিশ শনিবার রাতে জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে প্রচণ্ড বুকের ব্যথায় ছটফট করেছেন ওয়ার্ন। তারা আরও জানায়, ‘দুই সপ্তাহ আগে মি. ওয়ার্ন হার্টের চিকিৎসক দেখিয়েছিলেন।’ কিংবদন্তির অ্যাজমার সমস্যা ও হার্টে জটিলতার বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন।
ওয়ার্নের মৃতদেহ এ মুহূর্তে আছে কো সামুইয়ের সুরাথানি হাসপাতালে। তাঁর পরিবার এ মুহূর্তে যতটা দ্রুত সম্ভব সর্বকালের সেরা এই লেগ স্পিনারের মৃতদেহ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
থাই পুলিশের মুখপাত্র অবশ্য যেকোনো অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা ময়নাতদন্ত করে তেমন কিছু পাইনি। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে।’