শিরোনাম
নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর থেকেই ছুটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দল বা ঘরোয়া কোনো ম্যাচ নেই। সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান আইপিএল খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। অনুশীলন করলেও সেটা নিজেদের উদ্যোগেই করছেন দেশে থাকা ক্রিকেটাররা।
মুশফিকুর রহিম অবশ্য নিয়েছেন আরেকটি ‘সুযোগ’। এমনিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজটা বাজে গেছে তাঁর, ৫ ইনিংসে করেছিলেন মোট ৩৯ রান, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। তবে বিশ্বকাপের আগে মুশফিক গেলেন চট্টগ্রামে, সেখানে বিসিবির এইচপি (হাই পারফরম্যান্স) দলের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে ‘এ’ দল। আজ শুরু হয়েছে ওয়ানডে সিরিজ। আগেই ঠিক ছিল, প্রথম দুটি এক দিনের ম্যাচে খেলবেন মুশফিক। আজ নেমে ম্যাচজয়ী ইনিংসও খেললেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান।
ইমরুল কায়েসের ৬০ রানের পর মুশফিকের অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংসে এইচপি দলকে প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে সহজে হারায় মুমিনুল হকের নেতৃত্বে খেলা ‘এ’ দল। অপরাজিত ইনিংসের সঙ্গে সরাসরি থ্রোয়ে রান-আউট করে ফিল্ডিং অনুশীলনও সেরেছেন মুশফিক।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ‘এ’ দলের লক্ষ্য ছিল ২৪৮ রান। মুমিনুলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন নাজমুল হোসেন। ১৮ বলে ২৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসে নাজমুল মেরেছেন ৩টি চার ও ২টি ছয়। ৫ম ওভারে দলীয় ৩৫ রানে নাজমুল ফিরেছেন শামীম হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচে। ফুল লেংথের বল তুলে মারতে গিয়েছিলেন নাজমুল, নিজের বলে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন শামীম। পরের উইকেটও এসেছে আরেকটা দারুণ ফিল্ডিংয়ে। সুমন খানের শর্ট বলে পুল করেছিলেন মুমিনুল, ডিপ স্কয়ার লেগে নিজের বাঁ দিকে বেশ খানিকটা ছুটে যাওয়ার পর ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নিয়েছেন রেজাউর রহমান। মুমিনুল ২৯ রান করতে খেলেছেন ৪৫ বল।
মুশফিক চার নম্বরে নেমে নিজের প্রথম রান করতে অপেক্ষা করেছেন ৭ম বল পর্যন্ত। প্রথম ২৯ বলে তাঁর রান ছিল ৯। এরপর আমিনুল ইসলামকে সুইপ করে একটা চার মেরেছেন, একটু পর অবশ্য আবারও খোলসে ঢুকে গেছেন। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে তাঁর জুটিটা অবশ্য ‘এ’ দলকে এগিয়ে নিয়েছে ঠিকই। ৬৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করা ইমরুল আউট হয়েছেন আমিনুলকে স্লগ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে। শেষ পর্যন্ত ৮১ বলে ৬০ রান করেছেন এ বাঁহাতি। মুশফিকের সঙ্গে ইমরুলের জুটিতে উঠেছে ৫৯ রান।
ইমরুলের পর মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে মুশফিকের জুটিতে উঠেছে আরও ৪৪ রান। ৩১ বলে ২৪ রান করে সুমন খানের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন মোসাদ্দেক। অবশ্য এরপর আর উইকেট হারায়নি ‘এ’ দল। সুমনকেই স্কুপ করে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন মুশফিক, ৭৭ বলে। এরপরের ১৪ বলে করেছেন আরও ১৭ রান। শেষ পর্যন্ত ৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছয়। অন্যদিকে ২৩ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন।
৪৭.৫ ওভারে ৬ উইকেট বাকি রেখেই জিতেছে ‘এ’ দল। এইচপি দলের হয়ে সুমন ২ উইকেট নিয়েছেন ৫২ রানে। শামীম ১টি নিয়েছেন ৩৪ রান দিয়ে। আমিনুল ১টা উইকেট পেলেও ছিলেন খরুচে, ৫.৫ ওভারে গুনেছেন ৪৬ রান। উইকেটশূন্য থাকলেও আঁটসাঁট বোলিং করেছেন স্পিনার তানভীর ইসলাম ও পেসার রেজাউর। ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়েছেন তানভীর; রেজাউর ৮ ওভারে দিয়েছেন ৩৯ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে এইচপি দল অলআউট হয়েছে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার পারভেজ হোসেনকে ফিরিয়েছেন পেসার শহীদুল ইসলাম। তবে আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান খেলেছেন ৯৩ বলে ৮১ রানের ইনিংস, ৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তানজিদ ও মাহমুদুল হাসান যোগ করেছেন ১৩০ রান। ৬২ বলে ৩৮ রান করে মাহমুদুল ক্যাচ দিয়েছেন কাভারে, কামরুল ইসলামকে তুলে মারতে গিয়ে। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি তানজিদও। মোসাদ্দেক হোসেনকে তুলে মারতে গিয়ে মিড-অন থেকে পেছন দিকে ছোটা তাইজুল ইসলামের ভালো ক্যাচে পরিণত হয়ে সেঞ্চুরি থেকে ১৯ রান দূরেই থেমেছেন তিনি।
এরপর তৌহিদ হৃদয় হয়েছেন রানআউট। মিড-অনে খেলে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন, তবে সরাসরি স্টাম্প ভেঙেছেন মুশফিক। ৫ম উইকেটে শাহাদাত হোসেন ও অধিনায়ক আকবর আলীর ৫১ রানের জুটিতে অবশ্য দ্রুত ৩ উইকেটের চাপ সামাল দিয়েছিল এইচপি দল। তবে শহীদুলের বলে কাট করতে গিয়ে আকবর উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে আবারও খেই হারিয়েছে তারা। আকবর ২৪ বলে ৩ চারে করেছেন ২৮ রান।
এইচপি দল শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে ১৫ রানের ব্যবধানে। শাহাদাত শেষ পর্যন্ত করেছেন ৬৪ বলে ৫১ রান। এদিন ‘সুপার সাব’ হিসেবে খেলা রুবেল হোসেনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপ দলে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকা রুবেল শেষ পর্যন্ত ৩২ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে ‘এ’ দলের সেরা বোলার ছিলেন মোসাদ্দেক, ৭ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন এ অফস্পিনার। ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন শহীদুল, ৪৪ রানে ১টি নিয়েছেন কামরুল।