শিরোনাম
শারদীয় দুর্গোৎসবের পরপরই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা আজ। উৎসবটি কালীপূজা নামেও পরিচিত। একইসঙ্গে আজ উদযাপন হবে শুভ দীপাবলি উৎসবও। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, শ্যামা দেবী হলেন শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের প্রতীক। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ভক্তের জীবনে অবারিত কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে শ্যামা মায়ের আগমন ঘটে। আজ জননীরূপে বাঙালির জীবনে আবির্ভূত হবেন মহাশক্তিরূপী ত্রিনয়নী দেবী শ্যামা।
তবে সম্প্রতি দুগাপূজায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিমা ভাঙচুর, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাট, হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবার দীপাবলিতে কোনো উৎসব হবে না। উদযাপনের পরিবর্তে প্রতিটি মণ্ডপের সামনে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
কালীপূজার দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্ধ্যায় বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করবেন। এ দিনটিকেই বলা হয় দীপাবলি। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতে ‘দিওয়ালি’ নামেও পরিচিত। অমাবস্যার সব অমানিশা দূর করতে দীপাবলির এ রাতে প্রদীপ জ্বালানো হয়। পৃথিবীকে প্রতিনিয়ত অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষার প্রতীকী আলোকবর্তিকাও এ দীপাবলি উৎসব।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দেশের প্রতিটি মণ্ডপের সামনে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ শীর্ষক প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী।
তিনি জানান, রাজধানীর যেসব মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছে তার অধিকাংশগুলোতে কালীপূজা হবে। এছাড়াও অনেকে ব্যক্তিগতভাবে পূজা করবেন। তাই কতগুলো পূজা হচ্ছে রাজধানী কিংবা দেশজুড়ে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তার কারণে যতটুকু আলো দরকার তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বর্ণিল আলোকসজ্জা থাকছে না।
হিন্দু পুরাণ মতে, অন্যায়-অত্যাচার দূর করতেই মা কালীর মর্ত্যে আগমন। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনের বার্তা দিতে আসেন দেবী। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্যামাপূজা বা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। দীপাবলির সন্ধ্যায় মন্দির প্রাঙ্গণ, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সেজে ওঠে সারি সারি প্রদীপ আর মোমের স্নিগ্ধ আলোয়। অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক দীপাবলি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, শ্যামা দেবী শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সংগ্রামের প্রতীক। ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার ও সূত্রাপুরসহ পুরান ঢাকার অনেক এলাকায় মণ্ডপে বেশ ঘটা করে শ্যামাপূজা হয়। রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কালীপূজার আয়োজন রয়েছে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে শ্যামাপূজা হবে। প্রতিটি মণ্ডপে পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি দেবেন।