শিরোনাম
রাজপথের আন্দোলনের জন্য ‘অতিদ্রুত’ প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার এক আলোচনা সভায় এমন আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সময় খুব কম। আমাদেরকে অতিদ্রুত নিজেদেরকে সংগঠিত করতে হবে। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও মতকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এদেরকে পরাজিত করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। কারণ, এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে আজকে আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এবং খালেদা জিয়ার অনুপ্রেরণায় আমরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ি। দেশনেত্রীকে মুক্তি করি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশে নিয়ে আসি, দেশে সত্যিকার অর্থেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের নির্বাচনের ব্যবস্থা করি।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
ওমিক্রনের দীর্ঘ এক মাস পর এই প্রথম বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এবং দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনই ছিলো আমাদের জাতি সত্ত্বা নির্মাণের প্রথম ভিত্তি। কিন্তু আজকে খুব দুর্ভাগ্যের কথা, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের যে চেতনা ছিলো, একটা স্বাধীন, সুস্থ, একটা গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজ নির্মাণ করা এবং তারই ধারাবাহিতায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করবার জন্যে। আজকে সেই আশা-আকাঙ্খা, সেই চেতনা আমাদের ধূলিসাত হয়ে গেলো। আমরা অত্যন্ত লজ্জার সঙ্গে ক্ষোভের সঙ্গে ধিক্কারের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে চেতনা ও আকাঙ্খা তাকে এই আওয়ামী লীগ নামের একটা দল, যে দলটি একেবারে সমস্ত মানুষের স্বপ্নগুলোকে ভেঙে চুরে শেষ করে দিয়েছে। ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পরেও সত্যিকার অর্থে আমরা একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে পারি নাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সুচিন্তিতভাবে বাংলাদেশের যে আলাদা সত্ত্বা, আলাদা পরিচিতি-অস্তিত্ব সেটাকে তারা ধবংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে এখন সত্যিকার অর্থেই একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এ সরকার আসার পর থেকে আমাদের যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটাকে ভেঙ্গে ফেলেছে, আমাদের যে নির্বাচনের ব্যবস্থা ছিলো সেই ব্যবস্থাকে তারা ভেঙে ফেলেছে। জনগনের যে ভোটের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকবার যে অধিকার, তাদের ন্যুনতম কর্মসংস্থানের অধিকার তা তারা ধবংস করে দিচ্ছে। তারা সমস্ত দেশটাকে লুটপাটের রাজত্বে পরিণত করেছে। একে একে শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত ধবংস করেছে, অর্থনীতিকে তারা একটা লুটপাটের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকার আবারো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
সূত্র: যুগান্তর