শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের লবিস্ট নিয়োগে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন,‘বিএনপি লবিস্ট নয়,উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দিয়েছে’। বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর এহেন অভিযোগ খণ্ডন করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী।
ফখরুল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গ্রহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে তা স্বীকৃত। তার ভাষ্যমতে সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। খুন, গুমের মতো অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কীভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? বিএনপি মনে করে, জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণ করেছে।’
মঙ্গলবার(১ ফেব্রুয়ারি)গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, সরকার জড়িত না থাকলে তা প্রমাণের জন্য তারা উক্ত সাত কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতো। খুন, গুম,গায়েবী মামলাদায়ের বন্ধ করে, নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হেঁটে সরকার পদত্যাগ করতো।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতায় ৯০ লক্ষ ডলার(৯ মিলিয়ন) খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে। যার প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েব পেজে আছে। বিএনপি জানতে চায়, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ওই টাকার উৎস কী ছিলো? কীভাবে ওই টাকা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলো?’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘বিএনপি লবিস্ট নয়,উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দিয়েছে’ বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর এহেন অভিযোগ খণ্ডন করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী। যে চিঠির কথা বলা হয়েছে এই চিঠি দেখিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে।আপনারা দেখুন(নিজের স্বাক্ষরিত চিঠি) ওই চিঠি কাকে লেখা হয়েছিলো এবং চিঠির বিষয়বস্তু কী ছিলো? বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার সকল ব্যক্তির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড। আর তাই বিএনপি তার আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবেই দেশের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের সময় চায়, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ চায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশী-বিদেশী সব অংশীদারদের এই সরকারের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত রাখতে চায়।
তিনি বলেন, বিদেশীদের কাছে লেখা আমার ওই চিঠিসমূহ কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহবান মাত্র। প্রবাসী বাংলাদেশী একজনের লবিস্ট নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশী কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগেরে বিষয়টিও আজো আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।ওই পদক্ষেপকে নৈতিকভাবে সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায় দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। তবে বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য এই ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
সূত্র: আরটিভি