ইসি গঠনে আইনের উদ্যোগকে ‘যেই লাউ সেই কদু’ বলছে বিএনপি

ফানাম নিউজ
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৩৯

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন করার উদ্যোগ প্রসঙ্গে বিএনপি বলছে, পর্বত মূষিকের চেয়ে বেশি কিছু প্রসব করবে না। এত দিন যা প্রশাসনিক কায়দায় হতো, এখন তা আইনিভাবে হবে।

আজ মঙ্গলবার বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবিধানে আইনের মাধ্যমে ইসি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তা হয়নি। অবশেষে সেই আইন করে ইসি গঠন হতে যাচ্ছে। এ জন্য গতকাল আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। যাতে এখনকার মতো অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল আসন্ন নির্বাচন কমিশন এ আইনের মাধ্যমে গঠন হবে কি না, জবাবে তিনি মুঠোফোনে বলেন, হ্যাঁ, হবে।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি নতুন কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে। ইসি পুনর্গঠন নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে আসছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সংলাপে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে আইনের পক্ষে প্রস্তাব করে বলে গণমাধ্যমে খবরে বেরিয়েছে। গতকাল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে শেষ হয় রাষ্ট্রপতির এ সংলাপ। আওয়ামী লীগও ইসি গঠনে আইনের প্রয়োজন আছে বলে মত দেয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই আইনে কোনো নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ থাকতে পারবেন না। দুনিয়ার কোথাও এই নিয়ম নেই। সারা জীবন সরকারি আদেশ মেনে চলা যাঁদের অভ্যাস, সেই কর্মকর্তাদের নিয়ে এই কমিশন হবে। এ জন্যই এটা ‘যেই লাউ সেই কদু, বরং পচা কদু’।

ইসি গঠনের আইন নিয়ে আইনমন্ত্রীর আগের বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, দুর্ভাগ্য, আইনমন্ত্রী নিজের কথায় স্থির থাকেন না। একেক সময় একেক কথা বলেন। পরস্পরবিরোধী কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই সরকার ও তাদের গঠিত কোনো কমিশনের অধীন বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।

রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা সংলাপে গিয়েছে, তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আবার রাষ্ট্রপতিরও কোনো ক্ষমতা নেই। এই সংলাপে কোনো অর্জন নেই। সংলাপের জায়গায় সংলাপ, সিদ্ধান্তের জায়গায় সিদ্ধান্ত।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেননি। তাই এ নিয়ে কথাও বলতে চান না।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তৈমুর আলম খন্দকারের বিএনপির পদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, দলে এখনো এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, গুম ও খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনায় সরকার দানবিক পরিচয় দিয়েছে। নিজেদের দোষ ঢাকতে অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে।
বিএনপি দেশের আর্থিক খাতের অনিয়ম জনগণের সামনে তুলে ধরবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সূত্র: প্রথম আলো